মৌলভীবাজারে ওসমানীনগরের মেয়ে সুমা হত্যা : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০১৯, ৩:৩৮ অপরাহ্ণ
শেরপুর প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেকামুড়া গ্রামের গৃহবধূ সুমা বেগমের রহস্যজনক মৃত্যুতে পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুমা বেগমের পিতা ওসমানীনগরের মোস্তফাপুর গ্রামের বাবুল মিয়া বাদী হয়ে ২জুন, মঙ্গলবার মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন টাইব্যুনালে ৫জনকে আসামী করে এ মামলাটি করেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন, সুমা বেগমের স্বামী তারেক মিয়া (২৮), দেবর তোয়েল আহমদ (২২), শ্বশুড় কাদির মিয়া (৬০), শ্বাশুড়ি ঝুনুরা বেগম (৫০) ও সুমার মামা শ্বশুড় জসিম মিয়া (৫১)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ৫জানুয়ারী তারেক মিয়ার সাথে সুমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর শেকে শ্বশুড় বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য সুমাকে নির্যাতন শুরু করে। এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত সুমা তার বাবা বাবুল মিয়াকে অবগত করতো। সুমার স্বামী পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য সুমাকে চাঁপ দেয়। করে। সুমা যৌতুকের টাকা না দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামীরা সুমাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে। সুমার নির্যাতনের কথা বিবেচনা করে সুমার বাবা ৬/৭ মাস পর তারেক মিয়াকে ব্যবসার জন্য কিছু টাকা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এভাবে তিন চার মাস যাবার পর গত ১৪ জুন সুমার স্বামী আবারো যৌতুক দাবী করে সুমাকে মারধর করে। এই বিষয়টি সুমা তার বাবাকে অবগত করে। সুমা অন্তঃস্বত্বা হওয়ায় স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজনে নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করতো।
গত ১৬ জুন রাত ১০টা থেকে সুমার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ থাকায় সুমার বাবার বাড়ির লোকজন চিন্তায় পড়েন। এমনকি সুমার স্বামীর পরিবারের কারো সাথেই সেদিন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরের দিন ১৭ জুন বেলা আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় বাবুল মিয়া লোক মারফত খবর পান সুমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়েই সুমার বাবা বেকামুড়া গ্রামের গিয়ে বিছানায় শুয়ানো অবস্থায় সুমার লাশ দেখতে পান। সুমার বাবার বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলেও তাকে ভালো করে দেখার সুযোগ না দিয়ে তারেক মিয়ার ইশারায় মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ তাড়াহুড়ো করে সুমার লাশ থানায় নিয়ে যায় এবং পরবর্তিতে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
সুমার পিতা বাবুল মিয়া বলেন, মেয়েকে হারিয়ে আমাদের পরিবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। যৌতুকের জন্য তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে বলেই আমাদের মনে হচ্ছে।