ওসমানীনগরে শিক্ষকের শাস্তিতে হাসপাতালে ছাত্রী !
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ৬:৫৮ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওসমানীনগরে স্কুল শিক্ষকের শাস্তিতে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রী গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২২ আগস্ট দুপুরে উপজেলার বুরুঙ্গা ইকবাল আহমদ স্কুল এন্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীর নাম সাবিহা আক্তার পপি। সে বুরুঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব সিরাজ নগর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার মেয়ে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক আকিকুল ইসলাম। গুরুতর অসুস্থ সাবিহাকে আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, মেয়েটির পিঠের মেরুদন্ডে আঘাতের কারণে কালছে দাগ রয়েছে। হাতের আঙুল ফুলে গেছে। এছাড়া তার মাথায় আঘাত পেয়েছে। এ অবস্থায় মেয়েটিকে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আহত শিক্ষার্থীর অভিভাবক দ্বারা গালিগালাজের অভিযোগ এনে ক্লাস বয়কট এবং স্কুলের ছাত্রদের উস্কে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার অভিযুক্ত শিক্ষক ক্লাসে অন্য শিক্ষার্থী সুয়েতা রহমান হানিমকে পড়া জিজ্ঞেস করেন তখন তার উত্তর আহত সাবিহা সহপাঠীকে ইশারায় বলে দেন। এই অভিযোগে ক্লাসের শিক্ষক আকিকুল ইসলাম সাবিহাকে ব্রেঞ্চের উপরে এক পায়ে খাড়া করে রাখেন। একটানা খাড়া থাকার এক পর্যায়ে সাবিহা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। পরবর্তীতে ঐ স্কুলের স্থানীয় শিক্ষক বাছিত মিয়া মাথায় পানি ও পরে এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। বার বার বমি করায় ও অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে (সাবিহা) স্থানীয় গোয়ালাবাজারে এমবিবিএস ডাক্তার ইকবাল মাসুদ’র কাছে পরবর্তীতে আজ দুপুরে সিলেটের নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থীর পিতা মোস্তফা মিয়া সুরমানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কিংবা অন্য শিক্ষকরা আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা জানতে চাননি এমনকি দেখতেও আসেননি। অথচ মেয়ের এই অবস্থায় আমি গালিগালাজ করেছি বলে তারা স্কুলের ক্লাস বর্জন ও ছাত্রদের উস্কে দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আকিকুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা করা হলে তিনি সুরমানিউজকে বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমাদের স্কুলে ঘটেনি। ক্লাস বর্জনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিষয়। আর তা ম্যানেজিং কমিটি দেখবে। আপনারা প্রেসের লোক অন্য কিছু নিয়ে লিখেন। আমাদের নিয়ে কিছু লেখার দরকার নেই।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা হলে শীঘ্রই শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।