৬ মাস ধরে হদিস নেই ওসমানীনগরে গৃহবধূ সন্ধ্যার : সন্তানকে উদ্ধারে মায়ের আকুতি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০১৭, ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
জুবেল আহমদ সেকেল :
৬ মাস ধরে হদিস নেই সিলেটের ওসমানীনগরের সংখ্যালগু পরিবারের গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী সন্ধ্যা সরকারের(৩০)। একমাত্র সন্তানকে উদ্ধারে গরীব অসহায় ভুমিহীন বিধবা মা চঞ্চলা সরকারের আকুতি প্রশাসনের কাছে। গত ছয় মাস পূর্বে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরির উদ্দ্যেশে বাড়ি থেকে যাবার পর থেকে আর কোনো হদিস মিলছে না উপজেলার তাজপুর ইউপির রবিদাস গ্রামের স্বামী প্ররিত্যক্তা গৃহবধূ সন্ধ্যা সরকারের।
জানাযায়, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সরদারপাড়া গ্রামের মৃত বজিন্দ্র সরকার ও চঞ্চলা সরকারের একমাত্র মেয়ে সন্ধ্যা সরকারকে প্রায় ১২ বছর পূর্বে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বাল্লা গজন্নাথপুর ইউপির আমড়াকাই গ্রামের সহজ সরল সচিন্দ্র সরকারের নিকট বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর পর্যায়ক্রমে ২ মেয়ে ও ১ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সন্ধ্যা সরকার। সহজ সরল স্বামী সচিন্দ্রের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে গত ২ বছর পূর্বে সন্তানদের সাথে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে মায়ের কাছে চলে আসে সন্ধ্যা। ভুমিহীন অসহায় সন্ধ্যা ও তার সন্তানদের নিয়ে তার মা চঞ্চলা সরকার কাজের সন্ধ্যানে গত বছরের ডিসেম্বরে ওসমানীনগরের তাজপুর ইউপির রবিদাস গ্রামের গোপাল বৈদ্যের বাড়িতে ৭শ’ টাকা মাসে ভাড়া ওঠেন। গোপাল বৈদ্যের বাড়িতে ভাড়া উঠলেও সন্তান নাতি নাতনি নিয়ে অসহায় অবস্থা দেখে গোপাল বৈদ্য ভাড়ার টাকা না নিয়েই তাদেরকে তার বাড়িতে থাকতে দেন। ঝিয়ের কাজ করে কোনো মতে চলছিল চঞ্চলার পরিবার। এর মধ্যে সন্ধ্যার বড় মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে যায় তাদের বাবা সচিন্দ্র। আর মেজো মেয়েকে রবিদাস গ্রামের কয়েকজনের সহযোগীতায় সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের সিলেট শহরস্থ শিবগঞ্জ শেখ রাসেল পুর্ণবাসন কেন্দ্রে ভর্তি করে দেয়া হয়।
সন্ধ্যার মা চঞ্চলা সরকার জানান, মেয়ে স্বামীর বাড়ি থাকা কালে পূর্ব পরিচিত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বাল্লা গজন্নাথপুর ইউপির আমড়াকাই গ্রামের ফকির মোহাম্মদের ছেলে মুছা মিয়া সন্ধ্যাকে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি দেবার প্রস্তাব দেয় রবিদাস গ্রামের সন্ধ্যাদের বােিড়ত এসে। আর্থিক অনটনের মধ্যে ৭/৮ হাজার টাকা মাসিক রোজগারের প্রলোভনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে মুছার সাথে গার্মেন্টে চাকরি করতে ঢাকায় চলে যান গৃহবধূ সন্ধ্যা সরকার। ঢাকায় যাবার পর ১০/১৫ দিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মায়ের সাথে সন্ধ্যা সরকারের যোগাযোগ থাকলেও গত ছয় মাস থেকে সন্ধ্যার কোনো যোগাযোগ বা হসিদ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ সন্ধ্যার মা চঞ্চলা সরকার হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলেন, গত ছয় মাস থেকে আমার একমাত্র মেয়ে সন্ধ্যার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে তারও কোনো খোঁজ জানিনা। সন্ধ্যাকে ঢাকায় চাকরি দিতে নিয়ে যাওয়া মুছা এক দিন দুই দিন পর পর মোবাইলে ফোন করে মেয়েকে দেখতে হলে ঢাকায় যাবার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমার মেয়ে কোথায় আছে কেমন আছে কোনো ঠিকানা কিংবা সন্ধ্যার সাথে ফোনে কথা বলারও সুযোগ দেয় না। একমাত্র সন্তানকে উদ্ধারে বিধবা চঞ্চলা সরকার প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন।