সুনামগঞ্জে পাঁচ আসনে ১২ নেতা : তরুণরা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০১৭, ১২:৫০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি নির্বাচনী এলাকায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার জেলার পাঁচ আসনে দলীয় ১২ নেতা মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। দলীয় মনোনয়ন না পেলে তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। ভোটাররা চাচ্ছেন পরিবর্তন। ফলে, পাঁচটি আসনেই তরুণরা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন।
সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-মধ্যনগর) আসন : প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুনামগঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা। আগামী নির্বাচনে এ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী এখন পর্যন্ত পাঁচজন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ রফিকুল হোসেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান সেলিম, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক অ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকার, কৃষকলীগ নেত্রী শামিমা শাহরিয়ার। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের টানতে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ কেন্দ্রে জোর লবিং করে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসন : এ আসনে বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার সংখ্যা একাধিক হলেও শেষ পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সদস্য প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের সহধর্মিনী ড. জয়াসেন গুপ্তা মনোনয়ন পাবেন। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানও এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার। তবে এ আসনে নাসির উদ্দিন চৌধুরী বিএনপি প্রার্থী হলে জয়া সেনের বিকল্প ভাববে আওয়ামী লীগ।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর- দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসন : এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হচ্ছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি এ আসন থেকে টানা দুবার নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ ডন। ভোটাররা মনে করেন, ‘মন্ত্রী হওয়ার পর এমএ মান্নান কর্মীদের অবমূল্যায়ন করছেন, দলীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে তিনি যোজন যোজন দূর। এবার আর এমএ মান্নানকে দিয়ে নৌকা পার পাবে না। বিকল্প হিসেবে জাতীয় নেতার ছেলে আজিজুস সামাদ ডনকে দিলে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা যাবে’।
সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর) এ আসনে আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন ইতোমধ্যে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনের দেড় বছর আগে থেকে আলাদা বলয় নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন তারা। তবে, গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করা ও বয়স জনিত কারণে মতিউর রহমান বাদ পড়লে ব্যারিস্টার ইমন এখানে মনোনয়ন পেতে পারেন। এ ছাড়া এ আসনে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ূব বখত জগলুল মনোনয়ন চাইতে পারেন। মেয়র জগলুল মনোনয়ন চাইলে এ আসনে পাল্টে যেতে পারে র্দশ্যপট। সুনামতবে জাতীয়পার্টির সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে বর্তমান সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিছবাহ আবারো মনোনয়ন পাবেন বলে জানা গেছে।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসন : এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন দুজন। তারা হচ্ছেনÑ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি, বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শামিম আহমদ চৌধুরী।
মুহিবুর রহমান মানিক এলাকার বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। উন্নয়নে তাঁর ব্যাপক অবদান রয়েছে। তবে, নিজ বাসায় বোমা বিস্ফোরণের পুরনো ক্ষত ও গত পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী দাড় করানোর অভিযোগ রয়েছে মানিকের বিরুদ্ধে। প্রার্থী বদল হলে তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয় শামিম আহমদ চৌধুরীই এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন।