ঈদ কাদের জন্য ঈদ থেকে আমরা কি দীক্ষা পাচ্ছি !
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০১৭, ৪:০২ পূর্বাহ্ণ
শামীম আহমদ: ঈদ কারো জন্যে আনন্দের আবার কারো জন্যে বিষাদের। প্রাকৃতির বৈরিতায় মানুষ আজ পিষ্ট। চৈত্রের অকাল বন্যায় ফসলহানিতে মানুষ যখন দিশেহারা তখন সাম্প্রতিক দুই দফার বন্যায় আউশ-আমনের মাঠও তলিয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন দির্ঘস্থায়ী বন্যা দেখা দেয়ায় মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। আক্রান্তদের দুর্দশার চিত্র ফেইসবুকে ভাইরাল হলেও তাদের ভাগ্যে ত্রাণ জুটছে কি না সেটা রক্ষকরাই ভাল জানেন। দুর্গত এসব মানুষদের ঘরে ঈদ প্রবেশ করবে কি? সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের জন্য মুসলিম উম্মারা কোন বারতা দিচ্ছেন। ঈদ আমাদেরকে কি শিক্ষা দিচ্ছে। ঈদ থেকে আমরা কি শিক্ষা পাচ্ছি। এসব যেনো পুস্তকে আর কেতাবেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। পীড়াদায়ক একটি ঘটনায় বিবেকের তাড়না দুটি লাইন লিখছি কাউকে হীরো বানানো আমার উদ্দেশ্য নয়। ঈদুল ফিতরের দুই দিন আগের কথা। দিনটি ছিল শনিবার। ঘড়ির কাটায় তখন সকাল সাড়ে নয়টা কিংবা দশটা হবে। দোকানী তখন সবে মাত্র দোকান খুলেছেন। মালামাল গুলো পরিস্কার পরিপাটি করছেন। হঠাৎ করে একটা দরিদ্র টুকাই শিশু দোকানে এসে হাজির। শিশুটি দোকানীকে বলছে-ভাই আমি কি তোমার কাজে একটু সাহায্য করতে পারি? দোকানী উত্তর দিলেন কেন? ছেলেটির চোখ তখন অশ্রুসজল। দোকানীর প্রশ্ন তুমি কাদছ্ কেন? কিন্তু ছেলেটি কান্না থামাতে পারছে না। ছেলেটি কেঁদে-কেঁদে বলছে ভাই আমি এখনো ঈদের জামাকাপড় কিনতে পারিনি। আমি আশা করেছি তোমার দোকানে কাজ করে কিছু টাকা পাব, পরে অন্য কোনো দোকানে গিয়ে এভাবে কাজ করে যা পাবো সব মিলিয়ে মিলিয়ে একটা নতুন জামা কিনবো। তখন দোকানী বললেন, তোমার বাবা কি তোমাকে ঈদের জামাকাপড় কিনে দেননি, তখন ছেলেটি মাথা নাড়িয়ে বলল না। ছেলেটি জানায়- তার বাবা রিক্সা চালান। কিন্তু রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য তিনি রিক্সা চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য বাবা তাকে ঈদে জামাকাপড় কিনে দিতে পারেননি। ছেলেটির কথা শুনে দোকানীর চুখেও অশ্রুর উদ্বেগ হলো। তখন দোকানী সিদ্ধান্ত নিলেন এবার ঈদে জামাকাপড় কম কিনে গরীব ওই শিশুটিকে কিছু জামাকাপড় কিনে দিবেন। বালাগঞ্জ বাজারের বাসস্ট্যান্ডে তার পিতার নামে নামকরণ করা সাবু মিয়া মার্কেটে ফাইজা লাইব্রেরী এন্ড স্টেশনারী নামে ওই দোকানীর একটা ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে। ওই দোকানী মো: কাজল মিয়া পরে এই বিষয়টি নিয়ে বাপ্পন দেব, মতিউর রহমান, মো: মিনার আলী, সুহেল মিয়া, আবুল হাসান ও মীম আলিফ বাশার নামের তার কয়েক জন ঘনিষ্ট বন্ধুর সাথে শেয়ার করলেন। ঈদবঞ্চিত শিশুদের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দিতে তারাও সম্মতি জানালেন। তারপর হৃদয়বান যুবকদের অনুদানে ওই শিশুটি সহ আরো কয়েক জন অসহায় শিশুর হাতে ঈদের নতুন কাপড় তুলে দেয়া হলো। সুবিধা বঞ্চিতদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারায় তারাও ভিষন আনন্দিত হলেন। ঈদবঞ্চিত শিশুদেরকে সহযোগীতা করায় উদ্যোগী যুবকরা বালাগঞ্জ বাজারের শাহাজালাল ক্লথ স্টোরের রমিজ আলী, হেপি বস্ত্র বিপনীর প্লাবন দাস অসিতকেও তারা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।