ছাতকে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সালিশী ব্যক্তিত্বসহ নিহত ২, আহত ৩০
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০১৭, ৭:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ছাতকের জাউয়াবাজারে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জন নিহত হয়েছেন। ভুমি দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আবু সাইদ (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের আরো ৩০ জন। নিহত আবু সাইফ উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের হাবিদপুর গ্রামের আব্দুল কাউয়ুমের পূত্র।
এ সংঘর্ষের ঘটনার সূত্র ধরে একঘন্টা পর আরেকটি সংঘর্ষের সময় শালিসকারী সুলতান আহমদ (৫০) নামে আরো একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সুলতান আহমদ স্থানীয় বিনেন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আবু তাহের (২২), ফজরুল ইসলাম (৩৬) ও আব্দুল কাইয়ুমকে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কে জাউয়াবাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত আবু সাইফকে প্রথমে কৈতক হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী সেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সোয়া ১১টায় তার মৃত্যু হয়। এ সংঘর্ষের পর জাউয়াবাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায, উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কাইস্তপাড়া (সাহিত্য পাড়া) গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের সাথে জাউয়াবাজারের কিছু ভুমি নিয়ে একই ইউনিয়নের হাবিদপুর গ্রামের আব্দুল কাহারের দীর্ঘ দিন যাবৎ পূর্ব বিরোধ রয়েছে। বিরোধকৃত এ ভূমি নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ ভুমি দখল নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে উভয় পক্ষ লাটি-সোটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। আহত হয় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন। এ সময় আতংকে জাউয়াবাজারের সকল দোকান-পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে সংঘর্ষের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে জাউয়াবাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ও স্থানীয় মুরব্বীয়ানদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। সংঘর্ষের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজাদ মিয়া ও হেলাল মিয়া নামে দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনার সূত্র ধরে একঘন্টা পর দুপুর ১টায় বিনেন্দপুর গ্রামে সংঘর্ষ শুরু হলে মধ্যস্থতাকারী (সালিশকারী) সুলতান মিয়া এক পক্ষের ধাক্কায় খেয়ে মাঠিতে পড়ে যান। তাকে কৈতক হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষের সময় তিনি হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।
সংঘর্ষে আহত আব্দুল হাসিম (৫০), আজির মিয়া ২৫), আব্দুল কাহার (৫০), নজরুল ইসলাম (৪০), সিরাজ মিয়া (৫৫), সুমন মিয়া (১৪), আলমগীর হোসেন (২৪), আতাবুর রহমান (২০), জামিল আহমদ (১৬), রুকন মিয়া (১৮), আনোয়ার হোসেন (২০), আব্দুল গনি (২১), আবুল কালাম (৩২), আব্দুল কুদ্দুছ সুমনসহ অন্যদের কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
জাঊয়াবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন জানান- মালিকানা ও সওজ এর ভুমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান- নিহত সুলতান মিয়া সংঘর্ষের সময় হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন। দু’জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পূরোপুরি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের পর এলাকায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।