মাছ ধরা যাবে হাকালুকিতে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০১৭, ৯:৪৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওর তার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে পেয়েছে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হাওরে মাছ ধরা চালুর ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে হাওরের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে যায়। পরে ধান পচে পানি দূষিত হয়ে পড়ে। এতে বিভিন্ন জাতের মাছ মরে ভেসে ওঠে। এ অবস্থায় হাওরে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে ১ এপ্রিল বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়।
এদিকে হাওরের পানিতে কোনো কীটনাশক বা বিষাক্ত পদার্থ আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের একটি প্রতিনিধিদল গত রোববার হাওরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে। এ সময় দলের সদস্যরা বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি এবং পানির নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
মৌলভীবাজারের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আ ক ম শফিকুজ্জামান বলেন, প্রতিবছর হাকালুকিতে ১৪ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এবারের বন্যায় মাত্র ২৫ মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে। এ সংখ্যা খুব নগণ্য। তিনি বলেন, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৮ লাখ মাছের পোনা ছাড়া হবে।
কুলাউড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি ও মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাওরে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। এখন মাছ ধরতে আর কোনো বাধা নেই। তবে মৎস্য সংরক্ষণ আইন মেনে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার না করা ও পোনা না ধরতে জেলেদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কুলাউড়ার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, হাওরের পানিতে আগে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ২ দশমিক ৫ পিপিএম (আদর্শ মাত্রা ৪-এর বেশি), অ্যাসিড ও ক্ষারের মাত্রা ৫ দশমিক ৮ পিএইচ (আদর্শ মাত্রা ৭ দশমিক ৫ থেকে ৮ দশমিক ৫ পিএইচ) এবং অ্যামোনিয়া গ্যাস ১ পিপিএম (আদর্শ মাত্রা দশমিক ২-এর নিচে) ছিল। আজ সকালে হাওরের পানি পরীক্ষা করা হয়। এ সময় দ্রবীভূত অক্সিজেন ৫ দশমিক ১ পিপিএম, অ্যাসিড ও ক্ষারের মাত্রা ৭ দশমিক ৭ পিএইচ এবং অ্যামোনিয়া গ্যাস দশমিক ১ পিপিএম পাওয়া গেছে। এ পরীক্ষায় হাওরের পরিবেশ স্বাভাবিক পাওয়ায় মাছ ধরতে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
সুলতান মাহমুদ বলেন, ধান পচে পানি দূষিত হওয়ায় হাওরের শুধু কুলাউড়া অংশেই আট মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে। প্রতিবছর হাওরের কুলাউড়া অংশের ১২টি বিলে গড়ে ৯৫০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়।
মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের পরিদর্শক মেরিনা পারভিন বলেন, হাকালুকি হাওর থেকে সংগ্রহ করা মাটি ও পানির নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ফলাফল এখনো মেলেনি।