আমার কিছুই হবে না : সবার উদ্দেশ্যে জোর গলায় বদরুল
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মার্চ ২০১৭, ২:৪৭ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটে চাঞ্চল্যকর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। একই সঙ্গে বদরুলকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাঁকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বদরুল। রায় শেষে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার জন্য তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় । প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় বদরুল সবার উদ্দেশে জোর গলায় বলেন, তাঁর কিছু হবে না। এসময় উপস্থিত জনসাধারণ, সাংবাদিকসহ সবার সামনে উচ্চস্বরে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসা খাদিজাকে নিয়ে টিটকারী শুরু করে বদরুল।
এছাড়া গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সিলেটের মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম আদালতের বাইরে খাদিজার বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে সে উচ্চস্বরে খাদিজাকে উদ্দেশ্য করে টিটকারী শুরু করে।
খাদিজাকে ‘বিশ্বাসঘাতক, বেঈমান, মোনাফিক, প্রতারক আখ্যায়িত করে বদরুল সাংবাদিকদের ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, খাদিজার মঙ্গল হোক, আমার ফাঁসি হোক।
সাংবাদিকদের দেখে তিনি উচ্চস্বরে ব্যঙ্গ করে আরো বলতে থাকেন, খুশি হন সবাই। খাদিজা খুব সৎ মেয়ে। কি মেয়ে হা এরকম এরকম মেয়েই হয় না। খুব দারুণ মেয়ে। খুব সৎ।
গত বছরের ৩ অক্টোবর সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র বদরুল। ঘটনার পরপরই জনতা ধাওয়া দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে আটক করে পুলিশে দেয়।সংকটাপন্ন অবস্থায় খাদিজাকে প্রথমে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর খাদিজার অবস্থার উন্নতি হলে গত ২৮ নভেম্বর তাঁকে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) ভর্তি করা হয়।সিআরপিতে চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সিলেটে নিজ বাড়িতে ফেরেন খাদিজা।আদালত সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে শাহপরান থানায় মামলা করেন।গত ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।গত ৮ নভেম্বর আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৫ নভেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২৯ নভেম্বর বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়। আজ আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।