হবিগঞ্জে মা ও শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, দেখা দিয়েছে নানা রহস্য
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২:০৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের মাধবপুর ঘিলাতলী গ্রামে মা ও ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি পলাতক রয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ঘরের তীরের সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় মিলি ও তার ছেলে শিশু পথিকের লাশ উদ্ধার করে। সকালে মিলির দূর সম্পর্কের জা রিক্তা দেব তাদের ঘরে সামনে গিয়ে মিলিকে ডাকলে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতর প্রবেশ করতেই ঝুলন্ত অবস্থায় মা ছেলেকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে মাধবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম পলাশ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। প্রায় ৩ বছর আগে মৌলভীবাজার জেলার কাশিপুর গ্রামের মঞ্জু লাল দেবের মেয়ে মিলির সঙ্গে বিয়ে হয় ঘিলাতলী গ্রামের মৃত প্রিয় লাল দেবের ছেলে পিন্টু দেবের সঙ্গে। এর মধ্যে তার কোলজুড়ে ফুটফুটে পুত্রসন্তান পথিকের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই তার শাশুড়ি পঞ্চমী দেবের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। মিলির বোন পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাপ্পি দেব জানান, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখি ঘরের ভিতর আমার বোন ও তার সন্তানের লাশ ঝুলছে। তার স্বামী ও শাশুড়ি এ সময় বাড়িতে ছিলেন না। আমার বোনকে তার শাশুড়ি মানসিক নিযাতন করতেন। অনেক বার আমাদের কাছে দুঃখের কথা বলেছে। কিন্তু আমরা দুই বোন আমাদের বাবা মা’কে বিষয়টি জানাইনি। তার দুঃখ-কষ্ট যে এত ভারি হবে তা বুঝতে পারিনি। পার্শ্ববর্তী বাড়ির মিলির দুঃসম্পর্কের জা রিক্তা দেব জানান, প্রতিদিন সকালে মিলি তার বাচ্চাকে আমার কাছে রেখে বিভিন্ন কাজ করত। পরে আমাদের সঙ্গে হাসি খুশিভাবে সময় কাটাত। ওইদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন তাদের কোন সাড়া-শব্দ পাচ্ছিলাম না আর বাচ্চাকে আমার কাছে রেখে যায়নি তখন কৌতূহলবশত তাদের ঘরের গ্রিলে ধাক্কা দিয়ে ডাকতে থাকি। তখনও কোন শব্দ না পেয়ে গ্রিল খুলে ভিতরে গিয়ে দেখি মিলি ও তার শিশু সন্তান পথিক ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলছে। এ দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়ে যায়। পরে চিৎকার দিলে বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে আসে ।
এ সময় পিন্টু বাড়ির বাইরে ছিল। আর তার শাশুড়ি গত কয়েকদিন ধরে তার মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সোমবার সকালে তিনি খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন। মিলি সহজ সরল মানুষ ছিল। মিলির স্বামী একটি টোবাকো কোম্পানিতে চাকরি করে। সে সুবাদে প্রতিদিন সকালে সে বাইরে চলে যায়। স্ত্রী সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে পিন্টু বাড়িতে আসে। কিন্তু সরজমিন গিয়ে পিন্টু ও তার মা পঞ্চমী দেবকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশও অনেক খোঁজাখুঁজি করে পিন্টুকে বের করতে পারেনি।
থানার পরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম পলাশ জানান, মিলির স্বামী পিন্টু ও তার মা কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।