‘রাগীব আলী ও তাঁর ছেলে দুটি করে বিয়ে করেছেন’
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ২:০৬ পূর্বাহ্ণ
কাইয়ুম উল্লাস:
সিলেটের আলোচিত শিল্পপতি রাগীব আলী ও তাঁর ছেলে আবদুল হাইয়ের পক্ষে দুজন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে এ সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সাফাই সাক্ষীরা হলেন, দৈনিক সিলেটের ডাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও রাগীব আলীর ভাতিজা আবদুল হান্নান এবং রাগীব আলীর মালিকানাধীন মালনীছড়া চা-বাগানের সহকারী ম্যানেজার মাহমুদ হোসেন চৌধুরী।
সাফাই সাক্ষ্য দিয়ে রাগীব আলীর মালিকানাধীন মালনীছড়া চা-বাগানের সহকারী ম্যানেজার মাহমুদ হোসেন চৌধুরী আদালতে বলেন,‘ তিনি চা-বাগানে ১৮ বছর কর্মরত আছেন। রাগীব আলী একজন দানশীল ব্যক্তি। তিনি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, ভার্সিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।’ আদালত সাক্ষীকে সিলেট পাইলট স্কুলের জমি দখল করে মধুবন মার্কেট নির্মাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ মধুবন মার্কেটের জমি পাইলট স্কুলের কি না আমি জানি না।’
এরপর সাক্ষী মাহমুদ হোসেন চৌধুরী আদালতে বলে যান, রাগীব আলী দুটি বিয়ে করেছেন। তিনি ইন্ডিয়া-ব্রিটেনে নিয়মিত যাতায়াত করেন। দেশেরও বিভিন্ন স্থানে যান। তিনি সিলেটের ডাকের সম্পাদক এবং আবদুল হাই সহকারী সম্পাদক।’
দৈনিক সিলেটের ডাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও রাগীব আলীর ভাতিজা আবদুল হান্নান সাফাই সাক্ষী দিয়ে বলেন,‘ তিনি ৭/৮ বছর ধরে চা-বাগানে চাকরি করছেন। রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাই দুটি বিয়ে করেছেন। তিনিও ভারত-ব্রিটেনে যান। তবে তিনি কাজকর্ম তেমন একটা করতে পারেন না।’
রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. মাহফুজুর রহমান জানান, দুজন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্ক শুরু হবে।’
সিলেট নগরের উপকণ্ঠ পাঠানটুলায় দেবোত্তর সম্পত্তির তারাপুর চা-বাগান ভূমি মন্ত্রণালয়ের চিঠি জালিয়াতি করে বন্দোবস্ত নেন দৈনিক সিলেটের ডাকের সম্পাদকন্ডলীর সভাপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই।
এঘটনায় ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেটের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল কাদের বাদি হয়ে রাগীব আলী ও তার ছেলে ওই পত্রিকার সম্পাদক আবদুল হাইকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করে।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান পুনরুদ্ধারের রায় দেন। এ রায়ে ১৭টি নির্দেশনার মধ্যে এ মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মহানগর বিচারিক হাকিম আদালত এক আদেশে পিবিআই পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
১০ জুলাই রাগীব আলী ও ছেলেকে অভিযুক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
১০ আগস্ট দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ওই দিনই রাগীব আলী সপরিবারে ভারতে পালিয়ে যান। পরে জকিগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় পুলিশ রাগীব আলী ও তার ছেলেকে আটক করে। সূত্রঃ সবুজ সিলেট