“মানবতার কল্যাণে আমরা”
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০১৬, ১:৪৩ অপরাহ্ণ
শামীম আহমদ:
এসএসসি পরীক্ষা শেষ করেই সবাই চলে গেলেন বিভিন্ন কলেজে। দীর্ঘ কয়েক বছরের বন্ধুত্বের অটুট বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়। কেউ-কেউ দুঃখ কষ্ট পেয়ে বন্ধুদের ছেড়ে চলে যায় বা যেতেই হয়। কারণ সবারই তখন নতুন জীবনে পদার্পণের তাড়া ছিল। আবার অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পারিপার্শিক কারনে স্কুল জীবনের শেষ পরীক্ষায় বসার আগেই ছিটকে পড়ার করুণ পরিণতির কাছে হার মানতে হয়েছে। কলেজ জীবন শুরু করে হয়তো কিছু-কিছু বন্ধুদের মধ্যে বিছিন্ন যোগাযোগ থেকেই যায়। সবার এক সাথে যোগাযোগ আর হয়ে ওঠেনা। মাঝে মধ্যে চলার পথে কোনো-কোনো বন্ধুদের সাথে দেখায় হয়ে যায়। হাই-হ্যালো, কেমন আছিস। এটুকু পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। আগের মতো করে আড্ডা দেওয়া আর হয়ে ওঠেনা। আস্থে-আস্থে কলেজ জীবন শেষ হয়। কেউ চলে যায় প্রবাসে, কেউবা চাকুরী, কেউ ব্যবসায়, আবার কেউবা অন্যান্য পেশায়। জীবনের গহীনে ডুবে যায় সবাই। ব্যস্থ হয়ে যায় কঠিন জীবনে। অনেকের জীবনে চলে আসে নতুন অতিথি। বিয়ে-শাদী করে সন্তানাদি আর সংসার নিয়ে ব্যস্থ হয়ে যায় সবাই যে যার মত করে। অনেকেই স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্টিত হয়েছেন। স্কুল বন্ধুদের জন্য বুকের ভেতর মোচড় দেয়। কল্পনায় ফিরে যান স্কুল পড়ুয়া ছাত্র জীবনে। জীবন কয়দিনই বা বাকি। সামাজিক যোগাযোগের অনেক মাধ্যম থাকা অবস্থায় কৈশোরের বন্ধুদেরকে এক করার উদ্যোগ নেয়া হয়। বলছিলাম বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৮-৯৯ ব্যাচের বন্ধুদের কথা। অতি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘হোয়াটস অ্যাপে’ ‘বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় ফ্রেন্ডস্ ৯৮-৯৯ ব্যাচ’ নামে একটি গ্রুপ চালু করা হয়। দেশ এবং বিদেশে অবস্থানরত সবার সাথে কথা বলে কৈশোরের সহপাঠীদের মিলন মেলা আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়। আয়োজনে উপস্থিত থাকার জন্য স্বল্প সময়ে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারনা চালানো হয়। ‘বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় ৯৮-৯৯ ব্যাচের ফ্রেন্ডস্ গ্রুপ’ এর ব্যানারে শুক্রবার বিকেলে (২৮ অক্টোবর) “মানবতার কল্যাণে আমরা” শীর্ষক এই মিলন মেলা ও মত বিনিময়ে দেশে উপস্থিত থাকা প্রায় অর্ধ শতাধিক বন্ধু জড়ো হন। স্থানটি ছিল বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষ। ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান কর্ণধার আবার ঐ ব্যাচেরই ছাত্র। জমকালো আড্ডাস্থলে একজন আরেকজনকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। বুকে জড়িয়ে ধরেন একে অপরকে। সবাই হারিয়ে যান সেই স্কুল বেলায়। স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠলো সেই রঙ্গিন দিন গুলির কথা। শৈশবে হারিয়ে গেলো মন। আলাপচারিতায় উঠে আসে পরম শ্রদ্ধেয় স্যারদের কথা। আড্ডাছলে সবার কথায় ওঠে আসে খুনসুটি দুষ্টামি, খেলাধুলা, পড়াশুনা সব কিছুতেই এগিয়ে ছিল ৯৮-৯৯ ব্যাচ। সবাই যার-যার মত করে বললেন-আমরা সহপাঠীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ‘মানবতার কল্যানে আমরা’ এই শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেব। আমরা নিজেদেরে সুখ-দু:খ ভাগাভাগী করে নেব। সমাজের সকল মানুষের দু:খে কাঁদা ও সুখে হাসার চেষ্টা করবো। যেই স্কুল আমাদের মেধা দিয়েছে সেই স্কুলের সাথে এবং সেই সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধন যেন আর ছিঁড়ে না যায়। সেই জন্য একটা সেতুবন্ধনের সৃষ্টি করা হলো। স্কুলের কাছে আমাদের বন্ধুত্ব ঋণী। এই ঋণ শোধ হবার নয়। আমরা বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ থেকে ফিরে যেতে চাই সেই শৈশবের দিনগুলোতে। আড্ডা ও মত বিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন-৯৮-৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো: আব্দুল মুনিম, শামীম আহমদ, সিরাজুল ইসলাম, আবুল কাসেম অফিক, আমিনুল ইসলাম সারু, খালেদ মিয়া, বিদুৎ দাস, নজরুল ইসলাস, মিকন পাল, আব্দুল হামিদ, ফজলুর রহমান, আব্দুল হক, মিশু দাস, রিংকু দাস, শাহ আলম, সহদেব দাস, আনোয়ার আলী, বেলাল আহমদ, আছকর মিয়া, সোহেল আহমদ, হরে কৃষ্ণ দাস, দিপংকর দর, জীবন বিশ্বাস, সজীব সাহা, আনোয়ার হোসেন, চিনিবাস দাস, সুধাংশু দাস, সনজিত দে, পরিতোষ দাস, গোবিন্দ কান্ত দাস, পিন্টু দাস, সাইদুল ইসলাম মসাইদ, সাইফুল আহমত সেবুল, মোঃ মিজানুর রহমান ও মনজুর আলম প্রমুখ। প্রবাসে অবস্থানকারী ফ্রেন্ডস গ্রুপের উদ্যোক্তারা হলেন- আব্দুল অদুদ সুমন, নজরুল ইসলাম মাছুম, বজলুর রহমান, আরিফ হোসেন, জুনাব আলী, শামীম আহমদ, আবু ফতেহ্ চৌধুরী সায়মন, মোস্তাক আহমদ, কবির আহমদ, জিতু মিয়া, সাবুল আহমদ, মিজানুর রহমান ও সিপু আহমদ প্রমুখ।