পাকিস্তানের “নাক-গলানোর” প্রতিবাদে সার্ক বর্জন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১:১৬ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ বাংলাদেশ বলছে, ভারত, আফগানিস্তান ও ভুটানের সার্ক জোটের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের এই সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কোনো যোগসূত্র নেই। পাকিস্তান বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর প্রতিবাদেই তারা ইসলামাবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এক প্রেস ব্রিফিংএ বলেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তান অব্যাহতভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছিল, সেই কারণেই বাংলাদেশ পাকিস্তানে ওই সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছে।ভারত যেহেতুএই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে না, সেই প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশ এই অবস্থান নিয়ে থাকতে পারে বলে বিশ্লেষকরা যেসব কথা বলছেন তা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। তিনি বলেছেন বাংলাদেশ পাকিস্তানের ‘নাক-গলানোর’ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ করেছে পাকিস্তানের কাছে । “পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। প্রকাশ্যে সকলেই প্রতিবাদ করেছি যে পাকিস্তান আমাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে। এবং প্রত্যেকটি ফাঁসির পরেই তারা শুধু সমালোচনাই করে নাই, তারা পার্লামেন্টে রেসলিউশন নিয়েছে।””তাদের মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং এমন সমস্ত কথাবার্তা বলেছেন যেন আমরা পাকিস্তানি নাগরিকদের ফাঁসি দিচ্ছি। ওখানেই তো প্রমাণ হয়ে যায় যে তারা আমাদের ব্যাপারে কতখানি নাক গলাচ্ছে।” তিনি বলেছেন, “অন্যান্য রাষ্ট্র অন্য কারণে সার্কে যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেমন ভারত, আফগানিস্তান, ভূটান তারা বলছে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক, তারা সন্ত্রাস রপ্তানি করে যে কারণে তাদের প্রতিবেশীরা শান্তিতে থাকতে পারছে না। ইমাম বলেন তার ভাষায় পাকিস্তানের বাংলাদেশের ব্যাপারে অতিরিক্ত নাক গলানো সহ্যের সীমা পার হয়ে গেছে। কিন্তু ভারত সার্কে যোগ দেবে না ভারত সেটা জানানোর আগে বাংলাদেশ কেন বিষয়টি জানায় নি? এ প্রশ্নের উত্তরে মিঃ ইমাম বলেছেন “ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এমনিতেও যেতাম না।”ইসলামাবাদে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ বাঙালি নাগরিকদের এবং রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের অন্যান্যদের সঙ্গেও যেরকম দুর্ব্যবহার করে, তারপরেও যে আমরা তাদের সঙ্গে এতদিন কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছি সেটাই যথেষ্ট।” তিনি আরও জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরকারিভাবে ‘নোট ভার্বাল’ দেওয়া হয়েছে সার্ক সদরদপ্তরে – সার্ক সভাপতি বরাবর এবং তাতে এই কারণগুলোই বলা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নোট ভার্বাল গতকাল বা পরশু সার্ক সদরদপ্তরে পাঠিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট সার্কের ভবিষ্যত নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভারত, বাংলাদেশ সহ চারটি দেশ জোটের শীর্ষ সম্মেলনে যাবে না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে নভেম্বরে এই শীর্ষ সম্মেলনে হওয়ার কথা। ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার পটভূমিতে ভারত মঙ্গলবার জানায় যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই শীর্ষ সম্মেলনে যাবেন না। তার পরপরই বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং ভুটানও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।-সুত্র বিবিসি