বাংলাদেশের দিকে ফারাক্কায় গেট খুলে দেবে ভারত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০১৬, ২:১০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
ভারতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য দেশটির পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ফারাক্কা বাঁধের প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খুলে পানি ছেড়ে দিলে বিহার রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। খবর বিবিসি বাংলার।
দেশটির কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র সমীর সিনহা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, বর্ষাকালে এমনিতেই অন্য সময়ের তুলনায় ফারাক্কায় বেশি গেট খোলা থাকে। কিন্তু বিহার প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখন প্রায় ১০০টি গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফারাক্কায় ১০৪টি গেট আছে। কর্মকর্তারা বলছেন এ গেটগুলো খুলে দিলে ১১ লাখ কিউসেক পানি সরে যাবে যাতে করে বিহারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বিহার রাজ্যে গত এক সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে।
ফারাক্কায় গেটগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশকে আগেই নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে এবং এ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে পরামর্শ করা হয়েছে বলে মি. সিনহা উল্লেখ করেন। বর্ষার মওসুমে এটিকে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
এদিকে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র এবং যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের এ সময়টিকে ফারাক্কায় গেটগুলো খোলা থাকার কথা। নতুন করে গেট খুলে দেওয়ার কিছু নেই বলে কর্মকর্তারা মনে করেন। তারা বলছেন সাধারণত শুষ্ক মওসুমে পানি ধরে রাখার জন্য এ গেটগুলো তৈরি করেছে ভারত। কিন্তু এখন নদীতে পানি প্রবাহ এমনিতেই বেশি থাকায় গেটগুলো বন্ধ থাকার কথা নয় বলে উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১১ লাখ কিউসেক পানির প্রবাহ যদি বাংলাদেশের ভেতরে আসে তাহলে বাংলাদেশ অংশে পদ্মায় পানি বাড়বে কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হবে না। যেহেতু এখন ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি কমছে সেজন্য পদ্মার পানি বাড়লেও সেটি কোনো বন্যা পরিস্থিতির তৈরি করবে না বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের ভেতরে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভেতর দিয়ে সবচেয়ে বেশি পানি প্রবাহিত হয়। এদিকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির কারণে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করার কথা রয়েছে। বন্যার কারণে বিহার অঞ্চলে দুই লাখ মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে বিহার ছাড়াও মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডেও বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সোমবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিহার এবং উত্তর প্রদেশে জরুরি সহায়তা দল পাঠানো হয়েছে।