লন্ডনে অসাধু মিনিক্যাব ড্রাইভার ও অপারেটরের বিরুদ্ধে কঠোরতা আসছে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ
লন্ডন অফিস:
অসাধু মিনিক্যাব ড্রাইভার এবং ইলিগ্যাল অপারেটর কোম্পানীগুলো চিহ্নিত করতে আরো কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন লন্ডন মেয়র সাদিক খান। এজন্যে অতিরিক্তি আরো ২শ ৫০ জন অফিসার রাস্তায় নামানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগামী বছর এসব অফিসাররা রাস্তায় নামবেন। লন্ডনে অসাধু মিনিক্যাব ড্রাইভার এবং অবৈধভাবে পরিচালিত মিনিক্যাব অপারেটর কোম্পানাগুলোকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে বর্তমানে ৮০ জন এনফোর্সমেন্ট অফিসার কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে নতুন অফিসাররা যোগ দেবেন। অবৈধ মিনিক্যাবিং ব্যবসা বন্ধের পাশাপাশি লন্ডন শহরকে ক্লিন এবং গ্রীনসিটি করার লক্ষ্যে মিনিক্যাব থেকে রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলার বিরুদ্ধেও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লন্ডন মেয়র সাদিক খান। ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনসহ বিভিন্ন এসোসিয়েশন লন্ডন মেয়রের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
দ্যা লাইসেন্সড ট্যাক্সি ড্রাইভার্স এসোসিয়েশন সংক্ষেপে এলটিডিএ-এর মতে, লন্ডনের রাস্তায় প্রাইভেট হায়ার ভিকিলসের সংখ্যা গত বছর ৪০ হাজার থেকে ঝাম্প মেরে ১শ ১০ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। নতুন কমপ্লায়েন্স অফিসাররা ওয়েস্ট এন্ড এবং সিটির ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ইলিগ্যাল বা অবৈধ মিনিক্যাব ড্রাইভারের গতিবিধির উপর কঠোর নজরধারী করবেন। একই সঙ্গে তারা ইলিগ্যালভাবে পরিচালিত মিনিক্যাব অপারেটর কোম্পানীগুলোকেও খুঁজে বের করবেন। প্রাইভেট হায়ার অপারেটর লাইসেন্সিং সিস্টেমের পরিবর্তনের মাধ্যমে বড় বড় কোম্পানীগুলোর যে আয় বৃদ্ধি পাবে সেখান থেকেই নতুন অফিসার নিয়োগের আর্থিক উৎস হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। অক্টোবর থেকে মিনিক্যাব লাইসেন্সিংয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
লন্ডন মেয়র সাদিক খান মঙ্গলবার অসাধু মিনিক্যাব ড্রাইভার এবং ইলিগ্যাল মিনিক্যাব অপারেটরদের নজরধারী কঠোর করার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, লন্ডনের যাত্রীরা যখন ট্যাক্সি বা মিনিক্যাব ছড়েন, তখন তারা যেন নিরাপদ বোধ করেন এই কারণেই মেয়র অফিসের টিম টাউট এবং ইলিগ্যাল মিনিক্যাব এ্যাক্টিভিটিস প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের এনফোর্সমেন্ট এবং স্ট্রীট অপারেশনের ডাইরেক্টর স্টীভে বার্টন অসাধু ও ইলিগ্যাল মিনিক্যাব ড্রাইভার এবং অপারেটর প্রতিরোধে লন্ডন মেয়রের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অসাধু এবং ইলিগ্যাল মিনিক্যাবিংয়ের মাধ্যমে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলার পাশাপাশি তারা মিনিক্যাব লাইসেন্সিং আইনকে মারাত্মকভাবে উপেক্ষা করার সাহস দেখাচ্ছে। অসাধু ক্যাবিংয়ের মাধ্যমে কেউ লাইসেন্সিং আইন অমান্য করলে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি। এদিকে ক্যাবিং ব্যবসায় ইলিগ্যাল বা অবৈধ তৎপরতা প্রতিরোধে লন্ডন নগরীতে এনফোর্সমেন্ট অফিসারদের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে দ্যা লাইসেন্সড ট্যাক্সি ড্রাইভার্স এসোসিয়েশন সংক্ষেপে এলটিডিএ।
চলতি বছরের মে মাস থেকে ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন, মেট এবং ওয়েস্টমিনষ্টার কাউন্সিল যৌথভাবে অপারেশন নিয়ন নামে একটি অপারেশন চালাচ্ছে। এই অপারেশনের মাধ্যমে শুধুমাত্র উইকেন্ডে রাস্তা থেকে অসাধু মিনিক্যাব ড্রাইভারদের চিহ্নিত করা হয়। এই অপারেশনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ট্যাক্সি এবং আগাম বুকড প্রাইভেট হায়ার ক্যাবদের রাস্তা পরিস্কার করে দিতে অন্তত ১০ হাজার প্রাইভেট হায়ার ড্রাইভারকে এডভাইস দিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আর প্রায় ৫ হাজার ড্রাইভারকে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা ক্যাবিংয়ে নেমে কোনো ধরনের বেজ পড়েন না। আর প্রায় ৫শ ড্রাইভার পাওয়া গেছে যাদের কোনো বেজই নেই। এছাড়া ৬৫ জন ড্রাইভারের বিরুদ্ধে হায়ার আইন ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রায় ১২শ ৬৫ জন ড্রাইভার ট্যাক্সি রেঙ্কে পার্কিং করেছেন আর পার্কিং টিকেট ইস্যু হয়েছে ২ হাজার ৯শ ১৬ জন ড্রাইভারের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য আগামী অক্টোবর থেকে মিনিক্যাব লাইসেন্সিংয়ে ইংরেজি টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হবে। একই সঙ্গে লন্ডনের সব ট্যাক্সিতে কার্ড পেমেন্ট সিস্টেম বাধ্যতামূলক হবে ৩ রা অক্টোবর থেকে।