সংবাদ সম্মেলন : ওসমানীনগরে সকল অপরাধের মূল হোতা প্রণধীর ও তার পরিবার!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০১৭, ৯:০৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ওসমানীনগরের উমরপুর ইউনিয়নের সিকন্দরপুর পশ্চিম গাঁওয়ে প্রভাবশালী পরিবারের লালন করা সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় নিরীহ লোকজনকে হয়রানী করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া। প্রভাবশালীর বাড়িতে আশ্রিত প্রণধীর ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রামের সকল অপরাধের মূল হোতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। এক কথায় গ্রামের সব অপরাধের নেপথ্যে প্রণধীর এমন অভিযোগ চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের।
রবিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যানের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মাহফুজুল হক আকলু। সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলেও তিনি আড়ালে থাকেন এবং তার পক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের উপস্থিত রাখেন। তবে গ্রামের কোনো মানুষের অংশগ্রহণ দেখা যায়নি সংবাদ সম্মেলনে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া একজন সৎ, নিষ্টাবান ও জনদরদী ব্যক্তি। পক্ষান্তরে চেয়ারম্যানের প্রতিবেশী প্রণধীর ও তার পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা নাকি পুরুষের ন্যায় পেশা থেকে রুটি রুজির পথ হিসেবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেছে নিয়েছে। এলাকার প্রভাবশালী মহল দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। প্রণধীর তার বাড়ি দখলের অভিযোগ করেছে, অথচ ওই বাড়ি প্রভাবশালীর কাছে আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন প্রণধীর। এরপর চেয়ারম্যানের ভাবমূর্তি নষ্টের লক্ষ্যে একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। প্রভাবশালী মহলের পোষা প্রণধীরের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রদর্শন, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, এলাকায় ভীতি পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রকাশ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনসহ নানা অভিযোগ আনা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
তিনি আরও বলেন, প্রণধীর ও তার ভাই উমাধী, অর্জুনসহ অন্যান্যরা নিরপরাধ লোকজনের ওপর হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানী করে। জোর খাটিয়ে মৎস আহরণ করাসহ সাধারণ মৎসজীবীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় গ্রামের সাধারণ লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ১৭ মার্চ র্যাবের একটি দল প্রণধীরের বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায় এবং এই অভিযানের জন্য প্রণধীর একই গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে শাকিলকে দায়ি করে। র্যাব চলে যাওয়ার পর প্রণধীর ও তার সহযোগীরা শাকিলের বাড়িতে ভাঙচুর করে। হামলার অভিযোগে শাকিল বাদি হয়ে ২২ জনকে আসামি করে আদালতে দরখাস্ত মামলা নং ৪৫/২০১৭ দায়ের করেন। তাছাড়া তার সহযোগীরা গ্রামে বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়েছে এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে গিয়ে সত্যতা পায় এবং একটি নন এফআইআর প্রসিকিউশন মামলা রুজু করেন। এরকম অজ¯্র অভিযোগ দাঁড় করালেও তার স্বপক্ষে তেমন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি চেয়ারম্যানের পক্ষে সাফাইকারী ইউপি সদস্যরা।
অপরদিকে, প্রণধীরের মামলায় এজাহার নামীয় ২ নং আসামি রয়েছেন বলে স্বীকার করেন চেয়ারম্যানের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন পাঠকারী ইউপি সদস্য মাহফুজুল হক আকলু। এদিন বেলা ২টায় তাকে কোতোয়ালি পুলিশ গ্রেফতার করলেও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেয়। প্রণধীরের বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে তাকে ভিটেমাটি ছাড়া করতে চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে গুলি বর্ষণ করেছেন এমন কৌশল অবলম্বন করছেন কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল বদনাম রটানো হচ্ছে। তবে বিভিন্ন মামলার অভিযোগ করলেও অনেককিছুর তথ্য প্রমাণে অসঙ্গতির প্রমান মিলে। তাছাড়া দিনমজুর প্রণধীরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়ার নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে তার পেছনে প্রভাবশালী মহলকে দায়ি করেন তিনি। হয়রানীর হাত থেকে রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য জুয়েল মিয়া, ২নং ওয়ার্ড সদস্য সৈয়দ মাসুদ আলী, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য খালিক মিয়া, ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য রুকন মিয়া চৌধুরী, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সুহেল মিয়া, ৭নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলিম খোকন, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আমিরুল ইসলাম শিকদার।