ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যের আহ্বান মনোনয়ন বঞ্চিত খান জামালের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮:৩২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিএনপি থেকে সিলেট-৩ আসনের মনোনয়ন না পেলেও দল ও নেতৃত্বের প্রতি অটল আনুগত্য প্রকাশ করেছেন খান জামাল। ফেসবুকে দেওয়া এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে তিনি ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন— “ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ।” দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, সবাই মিলে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করার।
তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সুরমা নিউজ পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো—
আমার নিবেদন । ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যের আহবান।
দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সকল সময়ই আমি আনুগত্যশীল ছিলাম আজও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে আজও দলের সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে মেনে নিয়েছি। আমার নিজের নির্বাচনী এলাকা সিলেট – ৩ ( দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ) আসনে মালেক ভাই সহ সারাদেশে মনোনয়ন প্রাপ্ত ভাই ও বোনদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা। ব্যক্তিগত চাওয়া কিংবা পাওয়া এখানে মুখ্য নয়। আমি বিশ্বাস করি ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ। দেশ ও দলের প্রয়োজনে আসুন সকল মতপার্থক্য ও ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মাতৃতুল্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এবং আমাদের প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমানকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করি। মনে রাখবেন ধানের শীষ বিজয়ী হলে জিতবে বাংলাদেশ, জিতবে গনতন্ত্র, জিতেবে বিএনপি, জিতবে জিয়া পরিবার, জিতবো আমি, আপনি, আমরা সবাই।
সিলেট – ৩ আসনের প্রিয় সুহৃদ ভাই ও বোনেরা।
যারা আমাকে ভালোবাসেন, যারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী, যারা আমি দলীয় মনোনয়ন পাই ভেবে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই ভালোবাসার ঋণ এ জীবনে শোধ করার নয়। জানি আপনারা কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু তারপরও আপনাদের কাছে সবিনয় অনুরোধ আমি মনোনয়ন পেলে আমার জন্য যা যা করতেন এখন ধানের শীষের বিজয়ের জন্য যদি তা তা করেন তাহলে প্রমান হবে আপনারা মনেপ্রাণে দলকে ভালোবাসেন এবং আমাকেও ভালোবাসেন।
আমি আপনাদের প্রত্যাশা পুরনে ব্যর্থ হয়েছি এজন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। দলের সামগ্রিক বিবেচনায় আমি হয়তো যোগ্যতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারিনি এটা আমার ব্যর্থতা। তবে দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে পারি আমার ৩ যুগের রাজনীতিতে স্কুল ছাত্রদলের সভাপতি থেকে আজ অবদি দলের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশ ও দলের জন্য লড়াই করেছি। ছাত্র শিবিরের হাতে ২০০০ সালে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে এলেও এখনো পঙ্গু জীবনযাপন করছি। আওয়ামী ছাত্রলীগের হাতে একাধিকবার নিগৃহীত হয়েছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছি। জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। কারফিউ ভেঙে মিছিল করেছি। মামলায় জর্জরিত হয়ছি। কতবার জেল খেটেছি সেই হিসাব ভুলে গেছি। মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে এসেছি একাধিক বার। তারপরও নীতি ও আদর্শচুত্য হইনি।
ইনশাআল্লাহ বাকি জীবনেও আদর্শচুত্য হবনা।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান মহোদয় এর কষ্টের কথা শুনে সেদিনই হৃদয় থেকে কথা দিয়ে এসেছিলাম দল যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মাথা পেতে মেনে নেবো। আজ নিঃসঙ্কোচে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম।
আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি সিলেট – ৩ আসনের মনোনয়ন বঞ্চিত অন্যান্য শ্রদ্ধেয় অগ্রজ ও প্রিয় অনুজরাও যোগ্য প্রার্থী ছিলেন । তারাও দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আশাকরি আপনারাও মনের কষ্ট ভুলে গিয়ে দেশ ও দলের স্বার্থে আমাদের প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান এর সাথে দেওয়া কথা মেনে নিয়ে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত করতে কাজ করবেন।
আলহামদুলিল্লাহ।
আমি বিশ্বাস করি মহান আল্লাহতালা যা করেন তা হয়তো আমাদের মঙ্গলের জন্য করেন।
মনোনয়ন না পেয়েও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে যে বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন খান জামাল, তা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। তাঁর এই দায়িত্বশীল অবস্থান দেখে নেতাকর্মীরা বলছেন— “এমন নেতারাই দলের আসল সম্পদ।” কেউ লিখছেন “দলের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রকৃত সংগঠক,” আবার কেউ জানাচ্ছেন এমন পরিপক্ব নেতার জন্য শুভকামনা আগামীর রাজনীতিতে।







