চোরাচালান রোধে সিলেটে বিজিবি’র ড্রোন ক্যামেরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২:৫১ অপরাহ্ণ
চোরাচালান রোধে সিলেটে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)’র পক্ষ থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন ক্যামেরা। চোরাচালানের ম্যাসেজ পেলে বিজিবি’র পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই কেবল এ ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। তবে সেটি সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার অভ্যন্তরে। ইতিমধ্যে ড্রোন ক্যামেরার নজরদারিতে সিলেটে ধরা পড়েছে ইতিহাসের বড় গরুর চালান। ২৩৭টি গরু ভারত থেকে সীমান্ত পথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। ড্রোন ক্যামেরার অনুসন্ধানে ধরা পড়ার পর বিজিবি’র সদস্যরা বিছনাকান্দি সীমান্তের পীরেরবাজার এলাকা থেকে ওই পশুর চালান আটক করে।
এর আগে মধ্যরাত থেকে বিজিবি সদস্যরা ওই সীমান্তে ড্রোন ব্যবহার করে চোরাচালানের সন্ধান করে। সিলেটের বিজিবি’র ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিভুক্ত এলাকা হচ্ছে বিছনাকান্দি। ওই এলাকা ইতিমধ্যে চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিজিবি’র ফোর্স না পৌঁছানোর কারণে চিহ্নিত চোরাকারবারি সিন্ডিকেট সুযোগ বুঝে চোরাই পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে সেগুলো নিরাপদে নিয়ে চলেও যায়। বিজিবি সূত্র জানায়, বিছনাকান্দির বগাইয়া সহ কয়েক গ্রাম দিয়ে ভারতীয় পশুর চালান নামার খবর তাদের কাছে ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে কয়েক দিন ধরে তারা ড্রোন ক্যামেরা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছিল। বুধবার ভোরে ২৩৭টি গরুর চালান বাংলাদেশে প্রবেশের দৃশ্যটি ড্রোন ক্যামেরায় প্রথমে ধরা পড়ে। এরপর সিলেট ও বিছনাকান্দির বিওপি’র সদস্যরা গিয়ে অভিযান চালিয়ে ওই চালান আটক করে। এ চালান আটকের পর ওই সীমান্তে পিনপতন নীরবতা নেমে এসেছে। চিহ্নিত চোরাকারবারি নীরব হয়ে পড়েছে। তবে, স্থানীয় বিজিবি’র পক্ষ থেকে এরইমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ওই এলাকার চোরাচালান শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা হবে। এতে করে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
সিলেটের ৪৮ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল নাজমুল হক গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সীমান্তের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে চোরাচালান রোধে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটি শুধুমাত্র চোরাচালান রোধের জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে। বিছনাকান্দি সীমান্ত এলাকায় গোপন খবরের ভিত্তিতে বিজিবি’র পক্ষ থেকে প্রথম ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। আর ড্রোন ক্যামেরায়ই ধরা পড়ে সীমান্ত দিয়ে বড় একটি পশুর চালান আসছে। পরে বিজিবি’র পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে চোরাচালানের ওই পশু আটক করা হয়। তিনি বলেন, তার ব্যাটালিয়নের অবস্থান সিলেট ও সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকা। অনেক এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থাও নাজুক। গভীর বন জঙ্গল রয়েছে। এ অবস্থায় অত্যাধুনিক মনিটরিং সিস্টেম হিসেবে ড্রোন ক্যামেরা ভালো ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও জানান, ড্রোন ক্যামেরা সব সময় সীমান্তে থাকে না। ব্যাটালিয়নেই থাকে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। বিছনাকান্দি ছাড়াও এর আগে সিলেটের কয়েকটি সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ অংশের ভেতরে কয়েকটি এলাকায় ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এতে সফলতাও মিলেছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, ড্রোন ক্যামেরা সীমান্তবাসীদের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে। যেসব এলাকায় পণ্য চোরাচালান হয় সেসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রাও রাতে বদলে যায়। বিজিবি’র টহলের পাশাপাশি ড্রোন ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর কারণে সীমান্ত চোরাকারবারিদের মধ্যে আতঙ্ক নেমে এসেছে বলে জানান তারা।








