ওসমানীনগরে ১১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৮টি-তেই নেই প্রধান শিক্ষক, পাঠদানে ব্যাঘাত
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মে ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ণ
জুবেল আহমদ, স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে সিলেটের ওসমানীনগরে ৮৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভারপ্রাপ্ত ৩৩ জন প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুধু তা-ই নয়, উপজেলায় ৪৫টি সহকারী শিক্ষকের পদও ফাঁকা। দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্যতায় এসব বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে অতি দ্রুত এ সকল বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৮টি ইউনিয়নে ১১০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮৮টি বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। ৩৩ জন চলতি (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষক দিলে চলছে বিদ্যালয়গুলো৷ বাকি আরও ৫৫ টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে প্রায় ৫৫০টি; কর্মরত রয়েছেন ৫০৫ জন এবং বাকী ৪৫ টি ও দপ্তরীর ৫৬ টি পদ শূন্য রয়েছে।
কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়; না করলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তবে দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে নিয়মিত পাঠদান চালানো সম্ভব না। এতে বাকি শিক্ষকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় দে বলেন, প্রধান শিক্ষক থাকলে যেকোনো বিদ্যালয়েরই ভালো হয়। আমি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি প্রায় ৭ বছর ধরে। উপজেলার বিভিন্ন মিটিংয়ে আমাকে যেতে হয়। আমার বিদ্যালয়ে আরো ৫টি সহকারী শিক্ষক পদ খালি রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রধান শিক্ষক বলেন, একজন সহকারী শিক্ষক যখন ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্বে থাকেন তখন অনেক শিক্ষক মনস্তাত্ত্বিকভাবে তাকে মেনে নেন না। সহকারী শিক্ষক একজন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা নেই। তাই আদেশ পালনে অনীহা প্রকাশ করেন অনেকেই ।
কয়েকজন অবিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, একটি স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক হলেন ওই বিদ্যালয়ের অবিভাবক । তিনি অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত তো হবেই এবং পড়ালেখার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ দিন দিন কমে যাবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ’সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে স্কুলগুলোতে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাদিউল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পদগুলো ধারাবাহিক ভাবে শূন্য হচ্ছে। পাঠদানে কিছু তো ব্যাঘাত ঘটছেই। সরকার নিয়োগ না দিলে আমরা তো দিতে পারবা না। আর এটি উর্ধ্বতন কর্মকতাদের বিষয় । মূলত কেন্দ্রে মামলার জন্য পদন্নোতি হচ্ছে না। মামলা প্রত্যাহার হলে নিয়োগ হয়ে যাবে।