বন্যার পানি দেখতে উৎসাহীদের ভিড়, চলছে রিলস-টিকটক তৈরি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:১২ অপরাহ্ণ
বন্যা দেখতে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ভিড় করেছেন উৎসুক জনতা। দলবেঁধে মোটরসাইকেল নিয়ে দুর্গত এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন তরুণরা। যেসব এলাকায় নদী ভাঙছে, সেখানেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া লোকজন জানিয়েছেন, উৎসুক মানুষের চাপে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টায় কুমিল্লা-বুড়িচং সড়কের কালখড়পাড়, ভরাসার, ইছাপুরা ও মহিষমারা এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে।তাদের মধ্যে কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে, কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে। তাদের সঙ্গে আসা যানবাহনের কারণে ত্রাণ নিয়ে আসা ট্রাক ও পিকআপককে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ফলে বন্যাদুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
বুড়িচং উপজেলায় উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, “আমরা শুক্রবার থেকে বুড়িচংয়ে আছি। প্রতিদিন উদ্ধার তৎপরতা এবং ত্রাণ বিতরণ করছি। মহিষমারা এলাকায় দর্শনার্থীদের কারণে নৌকা চলাচল করতে পারে না। এজন্য ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। সেখানে অনেক মানুষকে ছবি তুলতে দেখা গেছে। কেউ কেউ ভিডিও, রিলস এবং টিকটক ভিডিও তৈরি করছেন। তাদের চাপে ভেঙে যাওয়া বাধ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের নিষেধ করলেও তারা শুনছেন না।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মঞ্জুরুল আলম অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এত মানুষ এসেছেন যে, তাদের কারণে বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।”
বন্যাকবলিত স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া জানান, যেখানে নদী ভেঙেছে সেখানেই তার বাড়ি। প্রতিদিন যত মানুষ আসছে, তাদের বেশিরভাগই দর্শনার্থী। তাদের চাপে বন্যাকবলিত স্থানে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বাকশিমুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কজুড়ে শতাধিক মোটরবাইক। শহর থেকে তরুণরা দলবেঁধে বন্যার পানি দেখতে এসেছেন। মোটরসাইকেলের আওয়াজে আশপাশে টেকা দায়।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, “এত মানুষ আসে টিকটক করতে, ভিডিও করতে। কতবার ডাক দেওয়া যায়। এসব মানুষের কারণে উপজেলা প্রশাসনের কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যারা ত্রাণ দিতে আসবেন, তারা যেন কষ্ট করে হলেও নৌকার ব্যবস্থা করে আসেন। তাহলে একদম দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। যারা দেখতে আসছেন, তাদের আসার দরকার নেই।