বিশ্বনাথে চাউধনী হাওরে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৩৮ অপরাহ্ণ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
সিলেটের বিশ্বনাথের চাউলধনী হাওরে বোরো ক্ষেতে পানি সেচ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছরকুম আলী দয়াল (৭৫) নামের এক কৃষক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষে আরও ১০জন আহত হয়েছেন। নিহত দয়াল উপজেলার চৈতন্নগর গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৮জানুয়ারি) বিকেল ৩টারদিকে হাওরের জলমহাল ইজারাদার সাইফুল ইসলাম ও কৃষক আহমদ আলী পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সন্ধ্যায় চৈতন্নগরের আসাম উদ্দিন (৩০), টিল্লাপাড়ার হাফিজ সায়েদ আহমদ (২০) ও দশপাইকা গ্রামের হুসিয়ার আলীকে (৩৬) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ইজারাদাররা এবছর পাম্প মেশিন বসিয়ে হাওরের পানি সেচে মাছ ধরে বিক্রি করায় হাওরে পানি সংকট দেখা দেয়। এতে ফুসে উঠেন হাওর পাড়ের ২৫ গ্রামের কৃষকরা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চাউলধনী ‘হাওর ও কৃষক বাচাও আন্দোলন’ কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করে ইজারাদরদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন কৃষকরা। সর্বশেষ গত ২০ জানুয়ারি ইজারা বাতিল, সীমানা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মরকলিপি দেন কৃষকরা। আর এতে অগ্রনী ভূমিকা রাখেন চৈতন্নগর গ্রামের কৃষক আহমদ আলী।
গতকাল দুপুরে হাওরের বিল থেকে নিজ জমিতে পানি সেচ দিতে গেলে দিলোয়ার নামে ইজারাদার সাইফুল পক্ষের একজন কৃষক আহমদ আলীকে বাঁধা দেন। এনিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধলে আহমদ আলীর চাচা ছরকুম আলী দয়াল (৭৫) নিহত হন। আহত হন নিহত দয়ালের ছেলে পাবেল আহমদ (২৫), ভাতিজা আহমদ আলী (৫৫), ইন্তাজ আলী (৪০), আহমদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (২৩), রেজাউল করিম (২০), প্রতিপক্ষের আহত দিলোয়ার হোসেন (৩৫), আসাম উদ্দিন (৩০), রায়হান আহমদ (২২), আছকির আলী (৫২)। নিহতের ভাতিজা কৃষক আহমদ আলী বলেছেন, নিজে উপস্থিত থেকে সাইফুল ইসলাম তার বাহিনীকে দিয়ে হামলা করে তার চাচা দয়ালকে প্রাণে হত্যা করেছে। নিহতের ভাতিজা কৃষক আহমদ আলী অভিযোগ করে বলেছেন, নিজে উপস্থিত থেকে ইজারাদার সাইফুল ইসলাম নিজস্ব বাহিনীকে দিয়ে হামলা চালালে ঘটনাস্থলেই তার চাচা দয়াল নিহত হন। আর ইজারাদার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, তার পক্ষের লোকজনের উপর হামলা করেছেন আহমদ আলী। আর মারামারির খবর শুনে দয়াল নামে আহমদ আলীর চাচা হাওরে যাবার আগেই চৈতন্নগর গ্রামের মোড়ে হঠাৎ করে হার্ড-অ্যাটাকে মারা গেছেন। বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, একজন মারা গেছেন ঠিকই। তবে, তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সংঘর্ষে নাকি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন তাও এই মূহুর্তে বলা যাচ্ছেনা।