২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের স্মরনে ভার্চুয়াল আলোচনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০২০, ১২:১৭ অপরাহ্ণ
ছায়ফুল আলম লেমন :
২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের স্মরনে গতকাল ইউ কে বিডি অনলাইন টিভির ভার্চুয়াল আলোচনার অনুষ্টান শোকার্ত হৃদয়ের শ্রদ্ধা অনুষ্টিত হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ওয়েলস আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মৌলভীবাজার মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি মোহাম্মদ।
ফিরুজ আহমদ এর সভাপতিত্বে এবং ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর পরিচালনায় ও ইউ কে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও যুক্তরাজ্য যুবলীগ বৃষ্টল বাথ এন্ড ওয়েষ্ট শাখার সভাপতি খায়রুল আলম লিংকন এর ব্যবস্খাপনায় অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল স্মৃতিচারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুলতান মাহমুদ শরীফ, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরীফা খাতুন এম পি, কানাডা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী গোলাম মাহমুদ মিয়া, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম কতোয়াল, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমান , দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক ও জেএটিভির চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী. বাংলাদেশ তরুনলীগ এর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা হাজী আব্দুল বাছিত, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিষ্টার সৈয়দা সীমা করিম, নিউপোর্ট আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ তাহির উল্লাহ এবং ম্যানচেস্টার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা এডভোকেট সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।।
সংক্ষিপ্ত প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্টিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী জননেতা এম এ মান্নান এম পি, বলেন ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা; জননেত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনারে হত্যাসহ বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা। তিনি সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন কভিড ১৯ তথা করোনা ভাইরাসের এই মহামারীতে যেখানে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ ভালো অবস্থানে রয়েছি। তিনি বলেন যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ সঠিক পথে থাকবে বাংলাদেশ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতা ও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তারা শুরু করেছিল বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির পালা। ইতিহাসের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘাতক চক্র কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি আইন’ পাস করে।জেলজুলুম নির্যাতন আর অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করে গেছেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতির পুনর্গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপরেখা রেখে গেছেন। রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। তিনি চেয়েছিলেন
বাংলাদেশ যেন সব সময় বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু ’৭৫-র ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্র ও বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তাঁর সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়নি।মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তাঁর নীতি ও আদর্শ মুছে ফেলা যাবে। কিন্তু তাদের সে চক্রান্ত এ দেশের মুক্তিকামী জনগণ সফল হতে দেয়নি তাইতো জীবিত মুজিবের চেয়ে অন্তরালের মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী।
২০০৪ সালের ২১ আগষ্টের সমাবেশে উপস্থিত থাকার অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরীফা খাতুন এম পি, ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম কতোয়াল, এবং দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক ও জেএটিভির চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী তাঁদের বক্তব্যে বলেন সেদিন আমাদের সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী। সেদিন আমাদের সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রটোকল অনুয়ায়ী কোন প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে কোন প্রকার নিরাপত্তার জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বিকাল ৫:২৫ মিনিটের দিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলা শুরু হয়। প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম বোমা হামলা, পরে বুঝতে বাকী রইলো না যে সে গুলো ছিলো গ্রেনেড হামলা।আর হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিলো যুদ্ধে ব্যবহার করা গ্রেনেড । মোট ১৬ টা গ্রেনেডর মধ্যে ১৩ টা বিস্ফোরিত হয় বাকী ৩ টি অবিস্ফোরিত থাকে। আমরা যদি মনে করি যে প্রত্যেকেটা গ্রেনেডে পাঁচ হাজার করে স্পিন্টার থাকে তাহলে সেদিন মোট ৬৫ হাজার স্পিন্টার চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। আল্লাহর ইচ্ছায় সৌভাগ্যক্রমে একটা স্পিন্টারও আমাদের নেত্রীকে স্পর্শ করেনি। সেদিন পুলিশ আমাদের সাহায্য না করে উল্টা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ শুরু করে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ করার মূল কারণ ছিলো সেই সুযোগে গ্রেনেড হামলার মূল হোতাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলা ছিলো পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আওয়ামী লীগের নাম নিশানা মুছে ফেলা। উনারা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রবাসে ও বাংলাদেশে বিএনপি-জামাতের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহবান জানিয়েছেন।
কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মাহমুদ মিয়া বলেন একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসরা একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি চিরতরে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ঐ গণদুশমনরা বাংলা ও বাঙালির মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার গভীর চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।’ তিনি একুশে আগস্টের নারকীয় বর্বরতার পেছনে মুখ্য ভ’মিকা পালনকারী সেই তথাকথিত হাওয়া ভবনের কুশীলবর, সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজপুত্র তারেক জিয়াকে অভিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ওয়েলস আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফিরুজ আহমদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে যে অপশক্তি, ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী হত্যা করেছিল, সেই একই গোষ্ঠী ও তাদের অনুসারীরা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের হত্যার চেষ্টা করে। গ্রেনেড হামালায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ এই মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নেপথ্যে থাকা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে দায়ীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি সহ এই মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়ে আজকের অনুষ্ঠানের
প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে অঙ্গীকারবদ্ধ থেকে বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস ঐতিহ্য ও সম্ভাবনাময় ইতিবাচক দিক তুলে ধরার লক্ষ্যে এবং সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশের প্রত্যয়ে ও এখানকার কমিউনিটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরার মাধ্যমে
ইউকে বিডি বাংলাদেশকে তুলে ধরছে বিশ্বময়। তিনি সবাইকে সীয়ার, কমেন্ট, সাবস্ক্রাইব ও ফলো করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে ইউকে বিডি অনলাইন টিভির সাথে থাকার জন্য সবার প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগ এর ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত ও ৩১৩ জন আহত হন। ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।