করোনায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের মাঝে দীর্ঘশ্বাস, মৃত্যু আতঙ্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ এপ্রিল ২০২০, ৯:৫৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
করোনা থামিয়ে দিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি প্রবাসীদের চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্য। চারিদিকে যেন ঘোর অন্ধকার, শুধুই দীর্ঘশ্বাস। মৃত্যু আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের।
মঙ্গলবার আরো ৮ জনের মৃত্যুর খবরে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কমিউনিটি বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত নিউইয়র্কে ৩৫ জনসহ যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। একে একে পরিচিত মুখগুলো ছবি হয়ে যাওয়ায় ভীতসন্ত্রস্ত প্রবাসীরা। লকডাউন মেনে টানা ১০ দিন গৃহবন্দি থেকে স্বজন-পরিচিতজনদের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে অসহায়ের মত ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। প্রিয় মানুষকে শেষ শেষ বিদায়ও জানতে পারছে না।
সোমবার মারা যান প্রবাসী ফটো সাংবাদিক স্বপন হাই। তার পরিবার চেয়েছিল তাকে সিটির পাশে লং আইল্যান্ডে সমাহিত করতে। কিন্তু বাংলাদেশ সোসাইটি তাদের লং আইল্যান্ডের কেনা কবরের জায়গায় স্থান দিতে পারেনি স্বপনকে। তাই বাধ্য হয়ে নিউজার্সির মালবরো সিটির মুসলিম ফিউনেরালে কেনা বাংলাদেশ সোসাইটির করবে বৃহস্পতিবার দাফন করা হবে সাংবাদিক স্বপনকে। লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটন মোমােরিয়াল গ্রেভইয়ার্ডে ৬ জন ও নিউজার্সির মালবরো মুসলিম কবরস্থানে ১০ জনের কবরের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি। সোসাইটর সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার জানান, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের নিউজার্সিতে দেয়া কবরের স্থানের জন্য কোনো মূল্য পরিশোধ করার তাগিদ তারা দেবেন না। অস্বচ্ছল কারো কাছ থেকে তারা অর্থ নেবেন না। তবে লং আইল্যান্ডের কবরস্থানের জন্য ন্যূনতম মূল্য নেয়া হবে।
লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল গ্রেভইয়ার্ডে বাংলাদেশ সোসাইটর পাশপাশি অন্যতম বৃহৎ আমব্রেলা আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ইউএস’র কেনা কবর সংগঠনের সদস্য ও জালালাবাদবাসীকে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেড চৌধুরী জুয়েল জানান, এ পর্যন্ত করোনায় মৃত ৬ জনের জন্য তারা জায়গা দিয়েছেন তাদের কবরস্থানে।
এদিকে কবরস্থানে জায়গা পেলেও লাশ দাফনের আনুসাঙ্গিক খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শ্রমজীবী পরিবারগুলো। করবস্থানের অন্যান্য খরচ গিয়ে দাঁড়ায় ২২শ ডলার থেকে সাড়ে তিন হাজার ডলার। এই আকস্মিক খরচ সামাল দিতে পারছেন না অনেক পরিবার। অবশ্য কিছু সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। স্বল্প আয়ের মানুষদের স্বজনদের মরদেহ দাফনের ব্যয় বাংলাদেশ দূতাবাস ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ দিতে পারে বলে আশা করছেন প্রবাসীরা।