মৌলভীবাজারে ৭-৮ জন জঙ্গির ছিন্নভিন্ন দেহ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মার্চ ২০১৭, ৬:১২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের বাগানবাড়ির জঙ্গি আস্তানায় ৭-৮ জন জঙ্গির ছিন্নভিন্ন মরদেহ পড়ে আছে বলে জানালেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। আত্মঘাতী বিস্ফোরণেই এদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওই জঙ্গি আস্তানায় গতকাল বুধবার (২৯ মার্চ) থেকে আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে সিটিটিসি আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে (বৃহস্পতিবার বিকাল) আস্তানাটিতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়। আস্তানার প্রবেশমুখে গ্রেনেডসহ শক্তিশালী বোমা ছড়ানো-ছিটানো ছিল। ভিতরে জঙ্গিদের ছিন্নভিন্ন মৃতদেহগুলো বীভৎস অবস্থায় পড়ে ছিল।’
জঙ্গিরা কখন বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মারা গিয়ে থাকতে পারে— এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) সোয়াট প্রথম অভিযান শুরু করে। অভিযান শুরুর পর পালানোর পথ নেই দেখেই সম্ভবত জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সপরিবারে আত্মহনন করেছে। সে এক বীভৎস চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে, সাত-আটটি ডেডবডি থাকতে পারে আস্তানায়।’
নিহতদের মধ্যে নারী-পুরুষের সংখ্যা জানতে চাইলে মনিরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে নিহতদের মধ্যে কয়জন পুরুষ ও কয়জন নারী, তা সঠিকভাবে বলা যাবে না। কারণ নিহত জঙ্গিদের শরীরগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্রাইম সিন সেখানে কাজ করছে। পরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ মিলিয়ে নিহত জঙ্গিদের সঠিক সংখ্যা জানানো সম্ভব হবে।’ জঙ্গিদের ছিন্নভিন্ন মৃতদেহগুলোতে আস্তানায় বীভৎস দৃশ্য তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ভেতরকার চিত্র আপনারা ধারণ করলেও তা প্রচার করতে পারবেন না। এতটাই বীভৎস সেই দৃশ্য।’
ব্রিফিংয়ের শুরুতে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ‘মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি দু’টি ঘেরাও করে। ঘেরাওয়ের পর ভেতর থেকে জঙ্গিরা গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি জানান দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিটিটিসির সোয়াট টিম সবচেয়ে উপযুক্ত। তাই তাদের অনুরোধ করি এখানে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালানোর জন্য। আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়েই ঢাকা থেকে মৌলভীবাজার আসেন সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম। সোয়াট টিমকে তিনি সঙ্গে করেই এনেছিলেন।’
আশকোনায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত যুবকের কাছে থাকা বিস্ফোরক, সীতাকুণ্ড ও আতিয়া মহলের বিস্ফোরকের সঙ্গে নাসিরপুরের বিস্ফোরকের মিল রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মনিরুল।
নাসিরপুরের এই আস্তানাটিকে জঙ্গিরা নিজেদের ‘হাইডআউট’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলো বলেও জানান মনিরুল। এদিকে নাসিরপুরের অভিযান শেষ হওয়ার পর এখন সোয়াট টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মৌলভীবাজার পৌরশহরের বড়হাটে অবস্থিত অন্য জঙ্গি আস্তানার দিকে রওনা হবেন বলে জানান মনির।