ব্রিটেনে ২৯ লাখ মুসলিম আতংকে : মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে তৎপর ইসলাম বিরোধীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০১৭, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলমানেরা এখন আতঙ্কে সময় পার করছেন। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে গোটা ব্রিটেনজুড়ে। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট আইএস হামলার দায় স্বীকার করার পর অনেকেই এই হামলার সাথে ইসলামের যোগসূত্র খোঁজার অপচেষ্টা করছেন। ইসলাম বিরোধীরা একে পুঁজি করে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছে। ইউরোপের মধ্যে ৩য় সর্বোচ্চ ২৯ লাখ মুসলমানের বসবাস ব্রিটেনে। এর মধ্য প্রায় ৫ লাখের অধিক রয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশী মুসলিম। আক্রান্ত এলাকা ও ইস্ট লন্ডনেই আছেন কয়েক লাখ বাংলাদেশী। গতকাল হামলার পর থেকে অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকে বের হননি। আজ তথাকথিত আইএসের হামলার দ্বায় স্বীকারের পর বাংলাদেশী মুসলমানরা এক অজানা আতঙ্কের মধ্য রয়েছেন। সতর্ক করা হচ্ছে কেউ যাতে একা রাস্তায় চলাফেরা না করেন। বিশেষ করে মহিলাদের। ব্রিটেনজুড়ে এখন হেট ক্রাইম বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
হাফিজ বদরুল আলম সুরমা নিউজকে বলেন, এই ভয়ংকর হামলার পেছনে যারা রয়েছে মুসলমান হিসেবে তাদেরকে আমি মুসলিম বলে গণ্য করতে পারি না ৷ এটা আমাদের ধর্মের পরিপন্থী ৷ ইসলাম কখনো সন্ত্রাসকে সমর্থন করেনা। ইসলামিক না বলে এদের সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়াটাই সমীচীন। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে- যাতে শান্তি বজায় থাকে এবং আতংক, ঘৃণা ও কু-সংস্কারের অবসান ঘটে ৷
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ গতকাল পার্লামেন্ট ভবনে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে। পুলিশ বলছে, হামলাকারীর নাম খালিদ মাসুদ। গতকাল পার্লামেন্ট ভবনে ঐ ঘটনার সময় এক পর্যায়ে হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ বলছে, ৫২ বছর বয়সী খালিদ মাসুদের জন্ম কেন্টে। কিন্তু তিনি বসবাস করতেন ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে।
পুলিশের খাতায় অপরাধী হিসেবে খালিদ মাসুদের নাম আগে থেকেই ছিল। অস্ত্র রাখা এবং আক্রমণ চালানোর অভিযোগে এর আগে তার সাজাও হয়েছিল। গতকালের সন্ত্রাসী হামলায় হামলাকারী ছাড়াও এক পুলিশ অফিসার সহ আরও তিনজন নিহত হন।
বুধবার বিকেল পৌনে তিনটার সামান্য আগে হামলকারী খালিদ মাসুদ ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ দিয়ে ড্রাইভ করে যাওয়ার সময় তার গাড়ি তুলে দেয় পথচারীদের ওপর। এসময় দুজন নিহত হয়, আহত হয় আরও বহু মানুষ। এরপর গাড়িটি এসে ধাক্কা দেয় পার্লামেন্ট ভবনের রেলিং এ। ছুরি হাতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এরপর হামলাকারী পার্লামেন্ট ভবনের দিকে দৌড়ে যায়। সেখানে পুলিশ তাকে বাধা দেয়।
তখন একজন নিরস্ত্র পুলিশ অফিসার কীথ পামারকে ছুরিকাঘাত করে হামলকারী। কীথ পামার নিহত হন। হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। নিহত হয় হামলাকারী খালিদ মাসুদও। ২০০৫ সালে লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডে সন্ত্রাসী হামলার পর এটি ছিল লন্ডনে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট ইতোমধ্যে খালিদ মাসুদকে তাদের একজন ‘সৈনিক’ বলে দাবি করেছে।