ব্রিটেনের স্কুলে ওসমানীর নাম বহালের পক্ষে অভিভাবকদের ঐতিহাসিক রায়
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মার্চ ২০১৭, ১০:৫৩ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ অবশেষে ওসমানী স্কুলের নামবদলের ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং বৃহত্তর কমিউনিটির শক্ত অবস্থানের প্রতিফলন ঘটেছে ব্যালটে। নাম বদলের সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে আয়োজিত ব্যালটে ২৩৬ জন অভিভাবক ‘ওসমানী’ নাম বহাল রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপরীতে ৪৪টি ভোট পড়েছে স্কুলের বর্তমান নাম বদলে ‘ভ্যালেন্স’ প্রাইমারী স্কুল করার পক্ষে। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে ৮৪% ভাগই স্কুলের নাম ‘ওসমানী’ বহাল রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এখন আগামী ২৮ মার্চ স্কুলের গভর্নিং বডি পূর্ণাঙ্গ সভায় আলোচনা করে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গভর্নিং বডির চেয়ারপার্সন মাইক টাইলর বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত’ নামবদলের ইস্যুতে কমিউনিটির এতো আগ্রহ দেখে তিনি কৃতজ্ঞ। তাঁর এই কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কিন্তু এরই সাথে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- এই নাম বদলের বিষয়টি কি আদৌ ‘প্রস্তাবিত’ ছিলো যেমনটি মাইক টেইলর এখন বলছেন? কারণ আমাদের জানা মতে, স্কুল তাদের নামবদলের সিদ্ধান্তটি এ বছরের আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে বাস্তবায়িত করার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলো। অভিভাবকদের কাছে লেখা এক চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে, নামবদলের এই উদ্যোগ উদযাপনের জন্য কর্তৃপক্ষ নতুন নামসহ স্কুল ইউনিফর্ম বিনা পয়সায় বিতরণ করবে এ সিদ্ধান্তও নেওয়া ছিলো। নামবদলের বিষয়টি শুধু প্রস্তাবের পর্যায়ে?থাকলে এ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এতটা এগিয়ে যায় কিভাবে?
সুতরাং ব্যালটে পরাজিত হবার পর এখন ইস্যুটিকে ‘প্রস্তাবিত’ বলে চালিয়ে দেওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নয়। স্কুলের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছিলো- এই এলাকার জনবসতির চিত্র বদলে যাওয়ার প্রেক্ষিতে স্কুলটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যেই নামবদলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। এ থেকে মনে হয়, স্কুলের ভবিষ্যতের চিন্তায় বিভোর কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমান শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রাধান্য পায়নি।
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম নায়ক ওসমানীর নাম মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত জানাজানি হবার পর কমিউনিটিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি ও তাদের প্রবল প্রতিবাদের মুখেই স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সাথে পরামর্শের ব্যবস্থা নেয়। বারার নির্বাহী মেয়রসহ রাজনীতিকরা ওসমানীর নাম মুছে ফেলার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকেই বলেন, সব মিলিয়ে বড় ধরনের চাপে পড়েই স্কুল কর্তৃপক্ষ অবস্থান পাল্টেছে । এমন মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আমরা শুরুতেই প্রশ্ন তুলেছিলাম, এই নামবদলের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অভিভাবকদের মতামত নেওয়া হয়নি কেনো? এর জবাব এখনো মেলেনি। নামবদলের সিদ্ধান্ত বাতিল হলেও আমরা মনে করি, এসব প্রশ্নের জবাব পাওয়া জরুরী।