ময়নুল-জগলু না আতাউর ? ওসমানীনগরে ভোটাররা বেছে নেবেন কাকে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মার্চ ২০১৭, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ নানা সমীকরণে ভোটাররা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ওসমানীনগরে। শুনেছেন প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি। শফিক চৌধুরীর আতাউর, লুনার ময়নুল না বিদ্রোহী জগলু- কাকে রেখে কাকে তারা বেছে নেবেন সে হিসাবও কষছেন এখনো। এই সমীকরণের মধ্য দিয়ে গতকাল প্রচারণার শেষ দিনে শোডাউন দিয়েছেন প্রার্থীরা।
নিজেদের কর্মী-সমর্থক বাহিনী ও তাদের শোডাউন ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ওসমানীনগরের প্রথম উপজেলা নির্বাচনের ভোট যে ত্রিমুখী হচ্ছে সেটি ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে। শক্তি-সামর্থ্য, জনপ্রিয়তায় কেউ কারও চেয়ে কম নয়। টক্কর দেয়া ভোটের মাঠের ফলাফল আসবে অঞ্চলভিত্তিক ভোটেই। এর মধ্যে জগলু দক্ষিণ ওসমানীনগর, আতাউর উত্তর অংশ ও ময়নুল মধ্যভাগ নিয়ে বসে আছেন। এ কারণে গতকাল উত্তর ওসমানীনগরের তাজপুরেই শেষ নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আতাউর রহমান। গোয়ালাবাজারে বিএনপির সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ময়নুল হক চৌধুরী, আর দক্ষিণ ওসমানীনগরের উনিশমাইলে শেষ সমাবেশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জগলু চৌধুরী।
তিনজনের সমাবেশ ছিল বেশ জৌলুসপূর্ণ। তাজপুরে নৌকার সমর্থিত প্রার্থী আতাউর রহমানের নির্বাচনী শেষ সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী সহ সিলেট জেলার সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা নির্বাচনী সমাবেশে ভোটারদের বলেছেন নৌকায় ভোট দিলে মডেল উপজেলায় পরিণত করবেন ওসমানীনগরকে। আর ময়নুল হক চৌধুরীর নির্বাচনী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন। তার সঙ্গে সিলেট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ সহ সিনিয়র নেতারাও প্রচারণা চালিয়েছেন। এ সময় তারা বলেছেন, ইলিয়াস আলী এই এলাকার সন্তান। ইলিয়াস গুমের জবাব দিতে হবে ধানের শীষে ভোট দিয়েই। উনিশমাইলে জগলু চৌধুরীর নির্বাচনী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ও বর্তমান বেশিরভাগ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। এছাড়া নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। এই সমাবেশে তারা ওসমানীনগর উপজেলাকে আলোকিত ও মডেল এলাকা গড়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে যোগ্য প্রার্থী দেখে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান তারা। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল হঠাৎ করেই আলোচনায় এসেছে কালনীচর এলাকার ডাবল মার্ডারের ঘটনা। ঘটনার ১০ দিনের মাথায় শুক্রবার রাতে পাল্টা মামলা রেকর্ড হয়েছে থানায়। নিহত সোহেলের মা হাওয়ারুন্নেছা বাদী হয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা তফজ্জুল সহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করেন। ২৫শে ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনার পর প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতারা সাদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবিরউদ্দিন আহমদকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। তবে গতকাল ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত আলী জানিয়েছেন ভোটের মাঠে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। প্রভাব বিস্তার করবে প্রশাসন। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যে নির্বাচনী নিরাপত্তা ছক সাজানো হয়েছে। রাত থেকে র্যাব ও বিজিবি ওসমানীনগরে নিরাপত্তায় কাজ শুরু করবে বলে জানান তিনি। এদিকে ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষের সমর্থনে গণসংযোগ করেছে সিলেট এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও সিলেট সরকারি কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। প্রচারণার শেষদিন শনিবার উপজেলার কুরুয়া বাজার, দয়ামীর, তাজপুর ও গোয়ালাবাজারে তারা এ গণসংযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম রহমান মৌসুম, ছাত্রদল নেতা মুহিবুর রহমান লিটন, মানোয়ার হোসেন রূপক, এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন রাজিব, সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এসএম ফখরুল ইসলাম, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ শামসুদ্দিন শামসুল, সহ-সভাপতি ছদিওল হোসাইন, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জামিনুল ইসলাম জামি, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল ইসলাম নাঈম, যুগ্ম সম্পাদক কয়ছর আহমদ সাহেদ, যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান বাদশা, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক আফজল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মিনহাজ, দপ্তর সম্পাদক জুবায়ের আহমদ, জাবেদ হাসান প্রমুখ। -সুত্র মানবজমিন