মুক্তি চান সিলেটের ফাহিমা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ৪:৩৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
নিজের এবং ভাইদের উপর দায়ের করা মিথ্যা অভিযোগে মামলার সঠিক তদন্ত ও হয়রানি থেকে মুক্তি চেয়েছেন ৩ সন্তানের জননী মোগলাবাজার থানার তুরুকখলা গ্রামের মৃত আমির আলীর মেয়ে ফাহিমা আক্তার। সিলেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার উপর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের নানা কাহিনী তুলে ধরেন এবং প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ফাহিমা বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের নালিউরি গ্রামের মো. ওয়ারিছ আলীর পুত্র মো. আবদুল মতিনের সঙ্গে ২০০২ সালের ৩রা এপ্রিল তার বিয়ে হয়। তার একে একে ৩টি সন্তান জন্মগ্রহণ করে। স্বামী দুবাই থেকে ভরণপোষণের জন্য তাকে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু সেই টাকা শ্বশুর ওয়ারিছ আলী, শাশুড়ি আক্তারুন নেছা, ভাসুর সামছুল হক, ভাসুরের স্ত্রী ছালেহা বেগম ও হেতিমগঞ্জ পূর্বপাড়া গ্রামের নূর মিয়ার ছেলে স্বামীর ফুফাতো ভাই খালেদ আহমদ তার কাছ থেকে জোরপূর্বক নিতে থাকেন। তারা কারণে-অকারণে তাকে মারধর করে পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এরপর তার স্বামী লন্ডন যাওয়ার জন্যও পরিবারের সবাইকে নিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিতে পারায় নানাভাবে তাকে নির্যাতন করেন। এ পর্যায়ে ফাহিমা স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগও তোলেন। ফাহিমা জানান- দু’টি পুত্রসন্তান জন্ম দেওয়াই ছিল তার অপরাধ। পুত্রদের পিতার ভূ-সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার জন্য স্বামীর স্বজনেরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে করছেন। তারা স্বামীর বাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এমনকি তারা ফাহিমাকে হত্যার চেষ্টাও করেন। এ প্রসঙ্গে ফাহিমা আরো বলেন, ‘একপর্যায়ে আমি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে একটি দরখাস্ত মামলা (মামলা নং-১৭১/২০১৬) করলে তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিলের সময় বিবাদীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি প্রদানের কথা উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।’ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য সম্পর্কে ফাহিমা উপস্থিত সাংবাদিকদের আরো জানান, ‘স্বামীর টাকায় ভাইয়ের নামে গাড়িক্রয়ের যে কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এ প্রতিবেদনের নারাজি প্রদান করেছি। এসব আমার প্রবাসী ভাইদের টাকায় কেনা হয়েছে। এরপর প্রবাসে থাকা অবস্থায় ৩১ মার্চ তার স্বামী নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাকে তালাক দিয়াছেন মর্মে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট দরখাস্ত করেন।’ দরখাস্তে যে পাওনা বিষয় সম্পত্তির দাবি করা হয় তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে ফাহিমা আরও উল্লেখ করেন, ‘এসব আমাদের হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করার গভীর চক্রান্ত। পরে আমার শ্বশুর মো. ওয়ারিছ আলী সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে ওই বছরের ২৮শে এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে আমাকেসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি সি, আর মামলা (নং ৮৪/২০১৬) দায়ের করেন। মামলার এজাহারে যে সব তথ্য দেয়া হয়েছে, মোটেও সত্য নয়। তারা আমার ভাই রমিজ উদ্দিনকে হত্যারও হুমকি দেন। নিরুপায় হয়ে হয়রানি করার অভিযোগ এনে আমি ২০১৭ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি সিলেট পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন প্রদান করি।’ সূত্রঃ মানবজমিন।