বিশ্বের ১০ লাখ তরুণের অনুপ্রেরণা সিলেটের সাবিরুল
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ সাবিরুল ইসলাম বাঙ্গালী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তা, লেখক ও বক্তা। যার লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে ১০ লাখ তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করা। ইতিমধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে তিনি বিশ্বের ২৫টি দেশের আট লাখের বেশি তরুণের সামনে কথা বলেছেন। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ১০০ ব্রিটিশ-বাংলাদেশির তালিকায় নাম আছে তাঁর। তিনি তিনটি বই লিখেছেন। তাঁর লেখা তরুণদের ব্যবসা শেখার গেম ‘টিন-ট্রাপেনার’ যুক্তরাজ্যের ৬৫০টি স্কুলে পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের খেলতে দেওয়া হয়। এটি সারাবিশ্বের ১৪টি দেশে পাওয়া যায়। ২০১০ সালে পৃথিবীর ২৫ তরুণ শিল্প-উদ্যোক্তার একজন নির্বাচিত হন সাবিরুল। তাঁর লেখা বই ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাট ইওর ফিট’ বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার কপি। তিনি এখন ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
জানা যায়,মাত্র ১৩ বছল বয়সে সাবিরুল ইসলাম সোয়ানলি বিজনেস স্কুলে তাঁর সহপাঠী ১৪ বছর বয়সের চাচাতো ভাই কবিরুলসহ স্কুল ক্যালেন্ডার ডিজাইনের ব্যবসা শুরু করেন। পড়াশোনার সঙ্গে প্রোডাকশন ডাইরেক্টর হিসেবে চাকরি করতে থাকেন তিনি। কিন্তু দুই সপ্তাহের মাথায় সাবিরুলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে স্কুলের আরও ছয় বন্ধুকে পরিচালকের পদ দিয়ে শুরু করেন ওয়েব ডিজাইনের ব্যবসা। তবে কিশোরদের কিছু করার আগ্রহে সাধুবাদ জানালেও কেউ কাজ দিতে চাইল না। পরবর্তীতে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল লিনচ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কোম্পানির ওয়েব ডিজাইনের কাজ দেন। পরবর্তীতে দুই বছরের চেষ্টায় ব্যবসার মৌলিক কিছু বিষয় শিখেন সাবিরুল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে নিউইয়র্ক স্টক মার্কেটে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হয়। যেখানে প্রতি সেকেন্ডে যেখানে ১০ লাখ ডলারের ব্যবসা আসে-যায়! সেখানেই লন্ডন স্টক মার্কেটে জুনিয়র ট্রেডার হিসেবে কাজ শুরু করেন সাবিরুল। ১৭ বছর বয়সে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখলেন তাঁর প্রথম বই দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাট ইয়োর ফিট।
প্রকাশের নয় মাসে বইটি বিক্রি হয় ৪২ হাজার ৫০০ কপি! আর এই সময়টায় ৩৭৯টি অনুষ্ঠানে নিজের বই ও ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি। বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত থেকে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে প্রেরণার প্রতীক হয়ে আলো ছড়াবে এই তরুণ।’ পরবর্তীতে সিঙ্গাপুরের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মার্শাল ক্যাভেন্ডিস থেকে দ্বিতীয় বই “দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাট ইয়োর ফিট-থ্রি স্ট্রাইকস টু এ সাকসেসফুল এন্ট্রাপ্রেনিউর” প্রকাশিত হয়। বইটি মূলত নানা দেশের ২৫ জন টিন-স্পিকারের (কিশোর বক্তা) সাফল্যগাথা। সাবিরুলের তৈরি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬-২৫ বছর বয়সী তরুণদের বক্তৃতা দেওয়ার জায়গা ‘টিন স্পিকার’ এর সাফল্য ছিল এটি। বই আর বক্তৃতার পাশাপাশি ‘টিন-ট্রাপেনার’ গেম তৈরির ভাবনা নিয়ে স্কুলপড়ুয়া তরুণদের ব্যবসা শেখার মজার এই বোর্ড গেম শুরু করলেন তিনি। একসঙ্গে শুরু হয় বিশ্বের ১৪টি দেশে শুরু হলো টিন-ট্রাপেনার বিক্রি। নানা দেশে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে গেমটি। ইংরেজির বাইরে আরও ১৩টি ভাষায় বের হয়েছে এটি। যুক্তরাজ্যের ৬৫০টি স্কুলে পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের খেলতে দেওয়া হয় সাবিরুলের এই উদ্ভাবন।