পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে “ব্ল্যাকমেইল” করাই জুলির পেশা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০১৬, ৬:১৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
‘জুলির সঙ্গে আমার কখনোই পরকীয়া ছিল না। এ কারণে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার কোনো প্রশ্ন আসে না। আমার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করতে এলাকার একটি মহল জুলিকে টাকার বিনিময়ে আমার পিছনে লেলিয়ে দিয়েছে। আর জুলির বহুগামিতাও এলাকার মানুষ জানেন। তার সঙ্গে বহু পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে।’- সিলেটের ওসমানীনগর থানার মাটিহানি গ্রামের জুলি বেগমের পরকীয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে পাল্টা মন্তব্য করেছেন একই এলাকার মেম্বার সেলিম আহমদ। গতকাল সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মেম্বার জুলির অভিযোগের নানা প্রশ্নের যুক্তি খণ্ডন করে বক্তব্য দিয়েছেন। বলেছেন, ‘জুলি বেগম একজন খারাপ প্রকৃতির মহিলা। তার স্বামী তিন মাস আগে তাকে বাসায় রেখে প্রবাসে চলে গেছে। এখনও সে স্বামীর ঘরের স্ত্রী। অথচ জুলি দাবি করেছে- দেড় বছর আগে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করা জুলির পেশা।’ বৃহস্পতিবার সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মাটিহানি গ্রামের দেলোয়ারের স্ত্রী জুলি বেগম। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওসমানীনগরের উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের মেম্বার সেলিম আহমদের বিরুদ্ধে তার সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলেন। এবং ৬ মাস বয়সী এক শিশু সন্তানকে সেলিম মেম্বারের সন্তান বলে দাবি করেন। জানিয়েছিলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেলিম মেম্বার তার সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করেছে। এ কারণে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেনও তাকে মৌখিক তালাক দিয়ে চলে গেছেন। কিন্তু গতকাল সেলিম আহমদ মেম্বার পাল্টা অভিযোগ তুলেন জুলি বেগমের বিরুদ্ধে। জানান, জুলির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে তিনি ওসমানীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এর আগে জুলি ও তার স্বামী তাকে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু পরে তারা সালিশ বৈঠকে বিষয়টি অস্বীকার করেছে। সেলিম আহমদ মেম্বার দাবি করেন, জুলি বেগম এলাকায় ‘বহুগামী’ মহিলা হিসেবে পরিচিত। বহু পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায়ই হচ্ছে তার মূল পেশা। এলাকায় জুলির চরিত্র প্রকাশ পাওয়ার পর সে এলাকা ছেড়ে দূরবর্তী তাজপুরে অবস্থান নিয়েছে। ওখানেও এখন তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ। তিনি বলেন, ‘জুলি বেগমের স্ত্রী দেলোয়ারের কাছে পাওনা হিসেবে তিনি ৪৫ হাজার টাকা পান। কিন্তু দেলোয়ার ওই টাকা দিচ্ছিল না। টাকার জন্য বেশি চাপ দিলে জুলি বেগমের স্বামী দেলোয়ার গত ৯ই এপ্রিল টাকা আনার জন্য তাদের বাসায় যাওয়ার কথা বলে। কথামতো আমি তাদের বাসায় গেলে তারা ‘ডাকাত-ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন আমার উপর হামলা চালায় এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে আমি পুলিশ ডেকে এনে তাদের কাছে চলে যাই।’ সেলিম মেম্বার বলেন, ‘এ ঘটনার পর সালিশ বৈঠক হলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে জুলির স্বামী দেলোয়ার ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে দস্তখত করে ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে আমার কোনো ক্ষতি করবে না বলে লিখিত অঙ্গীকার করে। ওই অঙ্গীকারনামায় স্ত্রী হিসেবে জুলি বেগমের দস্তগত রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় ইউপি সদস্য রোকন আহমদ চৌধুরী, মাসুদ আলী, আমিরুল ইসলামসহ এলাকার মানুষেরও দস্তখত রয়েছে।’ সেলিম আহমদ জানান, ‘সালিশ বৈঠকে পাওনা ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও জুলির স্বামী দেলোয়ার ওই টাকা ফেরত না দিয়ে পরবর্তীতেও নানা অপপ্রচার শুরু করে। তার সঙ্গে এলাকার আক্তার নামের এক ব্যক্তিও অপপ্রচারে নামে। পরে ১০ই অক্টোবর এক সালিশি বৈঠকে আক্তার অপপ্রচারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।’ সেলিম আহমদ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘জুলির সন্তান আমার নয়। আমি জুলির সঙ্গে পরকীয়া করিনি। তার স্বামীকেও আমি বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা দিইনি। সবই জুলির সাজানো। জুলির সঙ্গে একাধিক পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে। সেসব প্রমাণও রয়েছে। আর জুলি তার ছবির সঙ্গে আমার ছবি জুড়ে দিয়ে বিষয়টিকে সত্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যেটি আদৌ সত্য নয়। বরং জুলি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তার স্ক্যান্ডালপূর্ণ চরিত্র সমাজের কাছে তুলে ধরেছে।’