দুই শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন : বাবার বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট জেলার ওসমানীনগরের চিন্তামনি গ্রামে দুই ছেলেকে হত্যার পর ঘটনায় পাষণ্ড বাবা ছাতির আলীকে (৩৭) আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে তাকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন শিশুদের মা নুরবিন বেগম।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল চৌধুরী মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল আটটার দিকে চিন্তামনি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার দুই সন্তান মামুন (৭) ও রুজেলকে (১১) সুপারী গাছে তৈরি সুচালো লাঠি দিয়ে পেঠানোর পর খুঁচিয়ে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
আটকের পর সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুই শিশু সন্তানকে ধারালো এক ধরনের চোখা লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন ছাতির আলী। ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে স্থানীয় কালীমন্দিরে পালিয়ে থাকেন। স্ত্রীর সঙ্গে পরিবারিক কলহের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।
খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে দুই ছেলে মামুন (৭) ও রুজেলকে (১১) নিয়ে পাশ্ববর্তী হাওরে মাছ ধরতে যান ছাতির আলী। দুপুর দেড়টার দিকে বড় ছেলে রুজেলকে দিয়ে কিছু মাছ বাড়িতে পাঠান। এই সময়ের মধ্যে প্রথমে ছোট ছেলে মামুনকে (৭) খুন করেন। আধাঘণ্টা পর রুজেল (১১) ফিরে এসে ছোট ভাইকে খুঁজতে থাকে।
ছাতির আলী তাকে বলেন, এতো খোঁজাখুঁজি করছিস কেনো? বলেই বড় ছেলে রুজেলের মাথায় ছয়টি আঘাত করেন। খুন করার জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে যান ছাতির আলী।
পুলিশ জানায়, শিশু মামুনের মাথার পেছনে দু’টি, পিঠের মাঝখানে ও নাভি বরাবর সুচালো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া বড় ছেলে রুজেলের মাথায় আঘাতের ফলে তার মাথা থেঁতলে যায়। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত নারিকেল গাছের তৈরি চোখা লাঠি ও বাঁশের একটি লাঠি জব্দ করেছে পুলিশ।
পুলিশ আরো জানায়, স্ত্রীকে প্রায়ই সন্দেহ করতেন ছাতির আলী। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রীকে হত্যা করা। স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে সন্তানদের হত্যা করেন তিনি।