ওসমানীনগরে ডাবল মার্ডার : দুই শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে পিতা ছাতির আলী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ১:৫২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের ওসমানীনগরে দুই শিশুপুত্র হত্যার পেছনে কারণ পারিবারিক কলহ। স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জের ধরেই স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে দুই শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছেন বাবা ছাতির আলী।
আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছেন ঘাতক বাবা ছাতির আলী।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেটের ওসমানী নগরের চিন্তামণি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুই শিশু সন্তানকে ধারালো এক ধরনের চোখা লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন ছাতির আলী। ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে স্থানীয় কালীমন্দিরে পালিয়ে থাকেন। স্ত্রীর সঙ্গে পরিবারিক কলহের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।
খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে দুই ছেলে মামুন (৭) ও রুজেলকে (১১) নিয়ে পাশ্ববর্তী হাওরে মাছ ধরতে যান ছাতির আলী। দুপুর দেড়টার দিকে বড় ছেলে রুজেলকে দিয়ে কিছু মাছ বাড়িতে পাঠান। এই সময়ের মধ্যে প্রথমে ছোট ছেলে মামুনকে (৭) খুন করেন। আধাঘণ্টা পর রুজেল (১১) ফিরে এসে ছোট ভাইকে খুঁজতে থাকে।
ছাতির আলী তাকে বলেন, এতো খোঁজাখুঁজি করছিস কেনো? বলেই বড় ছেলে রুজেলের মাথায় ছয়টি আঘাত করেন। খুন করার জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে যান ছাতির আলী।
পুলিশ জানায়, শিশু মামুনের মাথার পেছনে দু’টি, পিঠের মাঝখানে ও নাভি বরাবর সুচালো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া বড় ছেলে রুজেলের মাথায় আঘাতের ফলে তার মাথা থেঁতলে যায়। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত নারিকেল গাছের তৈরি চোখা লাঠি ও বাঁশের একটি লাঠি জব্দ করেছে পুলিশ।
পুলিশ আরো জানায়, স্ত্রীকে প্রায়ই সন্দেহ করতেন ছাতির আলী। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রীকে হত্যা করা। স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে সন্তানদের হত্যা করেন তিনি।
নিহতদের মা ও স্বজনরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। আজ বুধবার মামলা দায়েরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এসপি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসমত আলী ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) আটক ছাতির আলীকে আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে দুই শিশুকে নিয়ে পাশ্ববর্তী একটি বিলে মাছ ধরতে যান তাদের বাবা ছাতির আলী। সন্ধ্যার পরও তারা ফিরে না আসায় স্থানীয়রা তাদের খুঁজতে বের হন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রুজেল ও মামুনের মরদেহ ডোবায় পাওয়া যায়। তাদের বাবা ছাতির আলী পলাতক ছিলেন।