ওসমানীনগরে বিএনপির একটি মানববন্ধন, দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ অক্টোবর ২০১৬, ৫:১৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ওসমানীনগরে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের এড়িয়ে হাতেগোনা ক’জন নেতা গোয়ালাবাজারে আয়োজন করেন মানববন্ধন ও সমাবেশ। রবিবার বিকালের অনুষ্ঠিত কর্মসূচির ব্যানারে আয়োজক হিসেবে উল্লেখ আছে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির কোন নেতার উপস্থিতি চোখে পড়েনি কর্মসূচিতে।
এ নিয়ে উপজেলা নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে অসন্তোষ, দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
হাতেগোনা ক’জন নেতাকর্মী নিয়ে এমন মানববন্ধনে নাখোশ হয়েছেন উপজেলা বিএনপিসহ উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি এমন কর্মসূচিতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। ওসমানীনগরে বিএনপিতো হাতে গোনা ক’জনের নয়। এখানে শত শত নেতাকর্মী রয়েছেন।
তারা অভিযোগ করেছেন- ‘‘নেতৃত্বের জানান দিতে সমাবেশ না করেই সমাবেশ করেছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করছেন ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি ও তাজপুর কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র দুই নেতা। রবিবার বিকালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে গোয়ালাবাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচার করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো: এহিয়া ও তাজপুর কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক সৈয়দ শাহজাহান আলী।
জানাগেছে, বিক্ষোভ সমাবেশের সংবাদে উল্লেখিত গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন নেতাদের নাম নেই। উপজেলা বিএনপির দ্বায়িত্বশীল এ নেতার কর্মকান্ডে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একাধিকসূত্রে জানাগেছে উপজেলা বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক গয়াছ মিয়ার কারান্তরীণ থাকায় নিজেদের আধিপত্য জাহির করতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ এহিয়া ও তাজপুর কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক সৈয়দ শাহজাহান আলী কৌশলে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য দ্বায়িত্বশীলদের না জানিয়ে ৪/৫ জন লোক এ কর্মসূচি আয়োজন করেছেন।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা শাহ এহিয়া। তিনি সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন- ‘দলের নেতা উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক গয়াছ মিয়া কারাগারে রয়েছেন। তিনিসহ দলের সর্বস্তরের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি ও হামলা-মামলা বন্ধের দাবিতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর আমরা নিয়মিতই ওসমানীনগরের রাজপথে সক্রিয় রয়েছি। এখানে নিজেকে জাহির করার কিছু নেই।’
সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দাওয়াত না দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন- ‘‘আসলে আয়োজনটির দাওয়াত দিয়েছেন তাজপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। তারা হয়তো সবাইকে দাওয়াত দেননি। আমরাও তাদের দাওয়াতে গেছি। মূলত এটির আয়োজক তারা।’’
গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলেন- ‘‘মানববন্ধনের ব্যানারে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনকে আয়োজক দেখানো হলেও উক্ত সমাবেশের ব্যাপারে বা রবিবার বিকালে গোয়ালাবাজারে বিএনপির কোন সমাবেশ হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। উক্ত ব্যনারে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির দায়িত্বশীল কেউ উপস্থিত ছিলেন না।’’
আর গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মুনির আহমদ মনির সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, গোয়ালাবাজারে একটি মানববন্ধন ও সমাবেশের খবর তিনি জেনেছেন। কিন্তু এটি ইউনিয়ন বিএনপির কোন কর্মসূচি নয়। তাজপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিনি জানান যেহেতু তার ইউনিয়নের কোন কর্মসূচি নয়, তাই তিনি যাননি।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, উপজেলার বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের না জানিয়ে বা আমন্ত্রণ না দিয়ে যেকোনো কর্মসূচি পালনের রীতি অনেক পুরনো। এ রীতির কারণে ওসমানীনগরে বিএনপির অবস্থান ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টদের কাছে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার অনুরোধ জানান আবদাল। সূত্রঃ সিলেটভিউ