লন্ডনে দুই নেত্রীর আগমনে মুখোমুখি অবস্থানে আওয়ামীলীগ-বিএনপি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১:১২ পূর্বাহ্ণ
লন্ডন অফিস:
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্য সফরকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে আওয়ামীলীগ-বিএনপি। নিজ নিজ দল থেকে অভ্যর্থনা জানালেও বিরোধীরা রয়েছেন প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত। গত কিছুদিন যাবত তাদের আগমনকে কেন্দ্র করে সরব হয়ে উঠেছে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছে যুক্তরাজ্য বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন। অন্য দিকে খালেদা জিয়া আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর হজ শেষে চোখের চিকিৎসা করানোর লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য আসার খবর শুনার পর থেকেই তাকে প্রতিরোধের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটি রয়েছেন চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার লন্ডনে আসছেন বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে। বিকালে তিনি লন্ডনে এসে পৌঁছাবেন। কালই তিনি কানাডার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। কানাডাতে দুদিন অবস্থানের পর তাঁর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। অল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে এলেও তাঁর আগমনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের রাজনীতি। ইতিমধ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে এক সভা করেছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতারা। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রীকে লন্ডনে স্বাগত জাননোর নানা আয়োজন নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা হয় বিএনপির বিক্ষোভের মুখে করণীয় নিয়েও।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক সুরমানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, এবারের বিক্ষোভ অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সম্প্রতি সরকার তাঁদের দলের আদর্শিক নেতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক কেড়ে নিয়েছে। এ কারণে নেতাকর্মীরা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি ক্ষুব্ধ। জানা গেছে, লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি নেই। তবে কানাডায় তিনি গ্লোবাল ফাণ্ড আন্তর্জাতিক সম্মেলন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে সৌদি আরবে হজ পালন শেষে চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষ হলে অক্টোবরের মাঝামাঝিতে দেশে ফিরতে পারেন তিনি। তার লন্ডন আগমনের খবর শুনার পর থেকেই যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ প্রতিরোধ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে সুরমানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান। তিনি বলেন দেশে মানুষ মেরে জঙ্গীদের মদদদাতা বিএনপি নেত্রীকে আমরা বহির্বিশ্বের সব জায়গায় প্রতিরোধের ঘোষনা দিয়েছি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে লন্ডন হয়ে দেশে ফিরবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। চোখের চিকিৎসা করানোর জন্যই মুলত লন্ডন আসবেন তিনি। সেক্ষেত্রে আগামী মাসের শেষ দিকে তিনি দেশে ফিরতে পারেন। দলের মধ্য সারির প্রভাবশালী এক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া সৌদি আরব ত্যাগ করবেন। সেখান থেকে তিনি লন্ডনে আসবেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে বেশ কিছুদিন লন্ডনে অবস্থান করতে পারেন বিএনপি প্রধান। প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান পরিবার নিয়ে দীর্ঘ আট বছরের অধিক সময় লন্ডনেই অবস্থান করছেন। তাঁর ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমানের স্ত্রী সন্তানরাও এখন লন্ডনে থাকেন। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে এসেছিলেন খালেদা জিয়া। তখন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিবারের সাথে কাটিয়ে দেশে ফেরেন খালেদা।