ব্রিটেনের ওয়ার্ক পারমিট চালুর বিবেচনায় নড়েচড়ে বসেছেন সিলেটিরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ ব্রেক্সিট-পরবর্তী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কাজের অনুমতিপত্র বা ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে ব্রিটেন। আর এ খবর পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছেন বাঙ্গালীরা বিশেষ করে সিলেটিরা। ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে ব্রিটেন যখন বাংলাদেশকে ১০ হাজার ওয়ার্ক পারমিট দিয়েছিল তখন প্রায় ৯৮ ভাগ সিলেটি প্রবেশ করেছিলেন ব্রিটেনে। নির্ধারিত সময়ের মধ্য তাদের ফিরতে হয়েছে দেশে। অনেকেই অবৈধভাবে থেকে গেলেও পরবর্তিতে ব্রিটেন সরকারের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতিমালায় তাদেরও একে একে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্টাফ সংকটে বন্ধের সম্মুখীন বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট মালিকদের জন্য এ খবর কিছুটা প্রাণের সঞ্চার করবে। দক্ষ শেফ ও স্টাফ সংকটের কারণে ধীরে ধীরে তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে । প্রায় সাড়ে ৪’শ কোটি পাউন্ড অর্থের যোগানদাতা এবং লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্রিটিশ কারী ইন্ডাস্ট্রি আজ চরম সংকটের মুখে। ব্রিটেনে বিগত ২ বছরে শুধুমাত্র লোকবলের অভাবেই বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশী মালিকানাধীন প্রায় ২ হাজার রেস্টুরেন্ট।
ব্রিটেনের হোম সেক্রেটারী আম্বার রাড মন্তব্য করেছেন,তবে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখেই করা হবে। এক সাক্ষাৎকারে রাড বলেন, কাজের অনুমতির ব্যাপারটি বিবেচনার মতো বিষয়, তবে এখনই কোনো কিছু উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তিনি মেনে নিয়েছেন, ব্রেক্সিটের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্য দেশগুলো ব্রিটেনের নাগরিকদের জন্য নতুন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। ব্রিটিশ নাগরিকদের ভ্রমণের জন্য ভিসা নেওয়াও তারা বাধ্যতামূলক করতে পারে। কিন্তু কিছু করার নেই। কারণ যুক্তরাজ্যের জনগণ অভিবাসন কমাতে ব্রেক্সিটের (যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার সংক্ষেপ) পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইউরোপের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক যাতায়াত বন্ধ করা এবং ইইউর একক বাজারে যুক্তরাজ্যের প্রবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আম্বার রাড বলেন, যুক্তরাজ্য যখন ইইউ থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসবে তখন পুরো পরিস্থিতির ওপর দেশটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ইইউর সঙ্গে কয়েকটি চুক্তি হবে এবং পুরো ব্যাপার হবে পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে। অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনার ব্যাপারে কনজারভেটিভ দলের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁদের সরকার এখনো ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে’। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অভিবাসী কমিয়ে আনতে অনেক সময় লাগবে। তিনি বলেন, অনেকে ‘স্টুডেন্ট ভিসা’ ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে আসেন। এই প্রবণতা কমানো হবে। ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের আগে আম্বার রাড ইইউতে থাকার পক্ষে জনমত গঠন করেছিলেন। তখন তিনি বোরিস জনসনসহ ব্রেক্সিট শিবিরের ব্যাপক সমালোচনা করেন। এখন অবশ্য তাঁর সুর অনেকটা নমনীয়।
ব্রিটেনের ওল্ডহামের রেস্টুরেন্ট মালিক জামাল উদ্দিন বলেন, ওয়ার্ক পারমিটের অনুমতি দিলে সেটা আমাদের জন্য স্বস্তিদ্বায়ক। লোকবল সংকটে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হলে আমাদের জন্য ভালো।ব্রিটেন জুড়ে আমাদের বাংলাদেশী মালিকানাধীন প্রায় ১২ হাজার রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এই শিল্পের বর্তমান সংকট লোকবল ।ওয়ার্ক পারমিট দিলে অন্তত বাংলাদেশীদের শ্রমে গড়া এই বিশাল শিল্পটি রক্ষায় কিছুটা সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।