প্রিয় জাকারবার্গ আমি হতাশ মর্মাহত
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১:৪২ পূর্বাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ “কমিউনিটি রুলস” এর দোহাই দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ ছবি ও লেখা ডিলিট করে দিচ্ছে ফেইসবুক। সম্প্রতি ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন হামলার একটি আইকনিক ছবিও তারা একই অজুহাতে ডিলিট করে দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষেপেছেন একজন প্রভাবশালী সাংবাদিক।
নরওয়ের একটি পত্রিকায় বিষয়টি বেশ জোরালোভাবে এসেছে। “Dear Mark Zuckerberg” শিরোনামে একটি খোলা চিঠি ছাপা হয়েছে Aftenposten পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায়। এটি নওয়ের সবচেয়ে বেশি সার্কুলেশনের একটি পত্রিকা। এই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী এস্পেন এগিল হ্যানসেন লিখেছেন এই খোলা চিঠি। লেখায় তিনি অভিযোগ করেছেন, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বাকস্বাধীনতাকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং তার ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভয়াবহ নাপাম বোমা হামলা চালায় তখন প্রায় ঝলসে যাওয়া কিছু মানুষ ছুটে যাওয়ার একটি দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করেন নিক উট (Nick Ut) নামে এক আলোকচিত্রী। এই মানুষগুলোর মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে যাওয়া এক উল্লঙ্গ কিশোরীও ছিল। এই ছবিটিই এখন ভিয়েতনাম হামলার আইকন হয়ে গেছে।
অথচ এই ছবি “কমিউনিটি রুলস” এর দোহাই দিয়ে সরিয়ে ফেলেছে ফেইসবুক। নরওয়ের এক লেখক বিশ্ব ইতিহাসে সামরিক সংঘাত নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করতে গিয়ে এই ছবিটি ফেইসবুকে পোস্ট করেছিলেন। কিন্তু ফেইসবুক সেটা মুছে ফেলতে চায়।
ওই সম্পাদক লিখেছেন, আমি মর্মাহত, হতাশ- এমকি রীতিমতো ভয়ের মধ্যেও আছি যে, আমাদের গণতান্ত্রিক এই সমাজের একমাত্র অবলম্বনের (বাকস্বাধীনতা) বিষয়ে আপনি আসলে কী করছেন! জাকারবার্গকে তিনি “বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সম্পাদক” বলেও ব্যঙ্গ করেন। তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমের “অধিকার এবং দায়িত্ব” হচ্ছে পাঠকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দেয়া। এমনকি সেটা সুখকর না হলেও ক্যালিফোর্নিয়ার ওই অফিসের (ফেসবুক) অ্যালগরিদমের দ্বারা তা বাধাগ্রস্ত হওয়া উচিৎ নয়। ফেইসবুক সারা বিশ্বের মানুষকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার যে “মহান” দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে সেটা “একটা কৃত্রিম অনুভূতি বা আবেগের” দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন সম্পাদক হ্যানসেন।