তাজপুর ডিগ্রী কলেজ সরকারীকরণের দাবী উপেক্ষিত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ
সুহেল আহমদ চৌধুরী:
ওসমানীনগর তথা বৃহত্তর বালাগঞ্জের উচ্চ শিক্ষার সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠান “তাজপুর ডিগ্রী কলেজ” সরকারীকরণের দাবী প্রায় ৪৪ বছর ধরে উপেক্ষিত। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষ প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণের দাবী করে আসলেও তাদের এ দাবী দাবীই রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে স্নাতক (অনার্স) কোর্স চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বাংলা, ব্যবস্থাপনা এবং অর্থনীতি এই তিন বিষয়ে অনার্স কোর্স চালুর জন্য আবেদন করা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছে। এখন কেবল অনুমোদন সময় ব্যাপার মাত্র।
সংশ্লিষ্ট কলেজ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাধীন বাংলার উপহার স্বরূপ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কমরেড আসাদ্দর আলী ও আজাহার আলী উদ্যোগে এবং এলাকার মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় ৩ একর ১৪ শতক জায়গার উপর কলেজটি যাত্রা শুরু করে। প্রাথমিকভাবে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী দিয়ে যাত্রা করলেও পরবর্তীতে স্নাতক পাস কোর্স চালু করা হয়। তবে এখানে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ চালু থাকলেও স্নাতক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ এখনও নেই।
রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সধীর পাল কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। যাকে রবীন্দ্রনাথ নিজে বলেছিলেন, “আমার সুধীর বাংলা জানে।” মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে কলেজটির পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও এখন উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক শ্রেণী মিলিয়ে ১৮০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
টিন ও বাঁশের তৈরি কয়েকটি কক্ষের মধ্যে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়ে আজ দু’টি পাকা দ্বিতল ভবন, দু’টি আধপাকা ভবন, কয়েক হাজার বই সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, পুকুরসহ অবকাঠামোগত সমৃদ্ধি চোখে পড়ার মত। স¤প্রতি যোগ হয়েছে একটি মসজিদ। একজন প্রবাসী মসজিদ নির্মাণের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছে।
শুরুতে কলেজ শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিতে কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি হিমশিম খেলেও ১৯৯০ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্ত হলে সে সমস্যা দূর হয়।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সকল বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ করা না গেলেও পরবর্তীতে সকল বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে দু’জন পিএইচডি ডিগ্রীধারীসহ ১৬জন এমপিওভূক্ত শিক্ষক, খন্ডকালীন ০৭জন শিক্ষক, ১জন লাইব্রেরিয়ান,৩জন অফিস সহকারী এবং পিয়ন ও নাইট গার্ড ৬জন কর্মরত রয়েছেন রয়েছেন।
কলেজ সরকারীকরণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ শওকত আলী সুরমানিউজ-কে বলেন,“সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী করার যে মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, এই উদ্যোগ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ওসমানীনগর উপজেলা সদরের প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটি সরকারীকরণের দাবী রাখে।”
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবুল খয়ের বলেন, “সহশিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ হলে এলাকার ছাত্র ছাত্রী উভয় মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। আশা রাখি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ধাপে এলাকাবাসী দাবীর প্রতি আন্তরিক হবেন।”