মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকের পরিশ্রমে পকেট ভরে দালালের
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ আগস্ট ২০১৬, ১:০৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ায় চাকরি থেকে শুরু করে আবাসন ব্যবস্থা পর্যন্ত সব জায়গাতেই দালাল মহলের আধিপত্য৷ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের কোন চাকরি পেতে হলে এজেন্ট বা কোন মানব সম্পদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হতে হয়। বিশেষ করে কুয়ালালামপুর ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় থাকা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এটা বেশি প্রযোজ্য৷ মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বেশিরভাগ বাংলাদেশী শ্রমিকই এসব দালালের বিভিন্ন অনিয়মের ভুক্তভোগী৷ সাধারনত বিদেশী শ্রমিকদের নিয়োগের ব্যাপারে আইন আছে যে- কোন হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, কোম্পানী বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য কর্মস্থলে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দিতে হলে শ্রমিকের ঐ প্রতিষ্ঠানের নিজ নামে পারমিট (ভিসা) থাকতে হবে৷ কিন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানেরই নিজেদের নামে শ্রমিক নেই৷ তাই তারা বিদেশী শ্রমিকের চাহিদা পূরনে এজেন্ট বা মানব সম্পদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে শ্রমিক চায়৷ এজেন্ট বা মানব সম্পদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কর্মস্থলে শ্রমিক নিয়োগ দেয়৷ যদিও এটা আইন বহির্ভূত, কিন্তু বেশিরভাগ শ্রমিককেই এভাবে চাকরি করতে হয়৷ নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মস্থল থেকে বেতন উঠিয়ে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ শত রিঙ্গিত কেটে, তারপর তাদের মর্জি অনুযায়ী বাকি সামান্য বেতন দেয় শ্রমিকদেরকে৷
অবৈধ ও স্টুডেন্ট ভিসার শ্রমিক বেশি হওয়ায় নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসাও তুঙ্গে৷ যদিও স্টুডেন্ট ভিসায় চাকরি করার কোন অনুমতি নেই, তবুও নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের হয়ে চাকরি করে স্টুডেন্টরা৷ এজেন্ট বা নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকে শ্রমিক যোগাড় করে দেয় বাংলাদেশীরাই। কেউ কেউ আবার ঐ প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার পদেও থাকে৷ এদের হাতেই বাংলাদেশী শ্রমিকদের বেতন দেয়া হয়৷ কম বেতন, কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বেতন কাটা ও দেরিতে বেতন দেয়াসহ নানা অভিযোগ আছে এজেন্টদের বিরুদ্ধে৷ এরকম একটি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের হয়ে কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে চাকরি করতো সালেহ উদ্দিন৷ শ্রমিক শোষণের পুরো প্রক্রিয়া খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। প্রবাস কথা’কে বললেন তার অভিজ্ঞতার কথা-
‘আমি এজেন্ট এর হয়ে হোটেলে চাকরি করেছি ৬ মাস৷ এ মাসের প্রথম দিকে আমার ব্যক্তিগত কারণে ৪ দিন কাজে যেতে পারিনি৷ ৪ দিন পর কর্মস্থলে গিয়ে দেখি, আমাকে কোন কিছু না জানিয়েই অন্য এক জনকে কাজে নেয়া হয়েছে৷ এ ব্যাপারে এজেন্ট এর বাংলাদেশী সুপারভাইজারের কাছে জানতে চাইলে সে জানায় কাজে না যাওয়ায় আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে৷ বেতন চাইলে, পরে দেবে বলে আমাকে ফেরত পাঠায়৷ পরে আমাকে মাত্র ৬’শ রিঙ্গিত দেয়, যেখানে আমার পাওয়ার কথা ১২’শ রিঙ্গিত। কারণ, পুরু মাসই কাজ করেছিলাম৷ বাকি রিঙ্গিত চাইলে দালাল নানা অযুহাত দেখিয়ে দূর্ব্যবহার করে৷’