গ্রেনেড হামলার মামলায় এখনও পলাতক ১৯
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ আগস্ট ২০১৬, ১১:০৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় এখনো পলাতক রয়েছে ১৯জন। এ মামলার ৫২ আসামীর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে ২৬ জন। এদের মধ্যে জামিনে আছে ৭জন। ৪৯১জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৯৩ জনের সাক্ষী নেয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ২২ ও ২৩ আগস্ট।
মামলাটি প্রসঙ্গে আদালতের স্পেশাল পিপি আবু আব্দুল্লাহ ভূইয়া জানান, মামলার এখন রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। গত ১৯ আগস্ট এই মামলার ২৯২ ও ২৯৩ তম সাক্ষীর জবানবন্দীকে জেরা শেষ হয়েছে। আগামী ২২ ও ২৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে-১ বিচারাধীন আছে। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-১ বিচারের জন্য পাঠানো হয়েছিল।
মামলার দীর্ঘসূত্রিতা সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, বিচার প্রার্থী মানুষ মনে করেন এত সময় লাগছে কেন। কিন্তু আসলে আইনকে সমুন্নত রেখে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে যতদ্রুত সম্ভব মামলাটি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে একই ঘটনায় দায়ের করা বিষ্ফোরক আইনের মামলা ও হত্যা মামলা একসাথে চলা, আসামি ও সাক্ষির সংখ্যাধিক্য, আসামিরা একাধিক মামলার তথা চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমার মামলা, সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের উপর গ্রেনেড হামলা, রমনা বটমূলে বোমা হামলাসহ বহু মামলার আসামি হওয়ার কারনে মামলা নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে।
এছাড়া সাক্ষিকে আসামির জেরা করার অধিকারের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সাক্ষিকে আসামির জেরা করার অধিকার আছে। তবে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে জেরা, যার জেরাকরার প্রয়োজন নাই তার পক্ষের জেরা করার কারনেও মামলা নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে।
মোট কতজন সাক্ষির সাক্ষ্য নেয়া হবে ও মামলা নিষ্পত্তিতে আর কতদিন লাগতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কতজন সাক্ষির সাক্ষ্য নেয়া হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। মামলা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করতে যতজন সাক্ষি নেওয়া দরকার ততজনই নেয়া হবে। আর এ কারনেই মামলা নিষ্পত্তিতে কত সময় লাগবে তা বলা সম্ভব নয়।
২০০৪ সালে ২১শে আগস্টকে বলা হয়ে থাকে রক্তাত্ত্ব। ২০০৪ সালের এই দিনে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়ে ছিল। শেখ হাসিনাসহ পুরো আওয়ামী লীগের উর্ধ্বতন নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়। ভয়াবহ এই হামলায় শেখ হাসিনা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মীনি আইভি রহমানসহ ২৪ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী নিহত হন। আর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে কয়েকশ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী।
ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে। গ্রেনেড হামলার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ওই হামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি বর্তমানে ঢাকার দ্রুত বিচার ইব্যুনাল-১ বিচারাধীন রয়েছে। মামলার এখন সাক্ষী নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামিনে আছে আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।