স্ত্রীর জন্য অসাধ্য সাধন করলেন বাপুরাও
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০১৬, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
ভারতের নাগপুরের দিন মজুর বাপুরাও তাজেঁর স্ত্রী সঙ্গীতা দলিত সম্প্রদায়ের। গ্রামে কুয়ো না থাকায় ১কিঃমিঃ দূরে এক উচ্চ বর্ণের ব্যক্তির কুয়ো থেকে পানি আনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সঙ্গীতা নিম্ন বর্ণের বলে তাঁকে পানি আনতে দেয়নি উচ্চ বর্ণের লোকজন। পানির পরিবর্তে অপমান অপদস্থ করে ফিরিয়ে দেয়। বাড়িতে এসে স্বামীকে ঘটনা বললে রাগে ক্ষোভে কান্না শুরু করেন বাপুরাও তাজঁ। সাথে সাথে কঠিন চোয়ালে প্রতিজ্ঞা করে বসলেন নিজেই স্ত্রীর জন্য কুয়ো খোঁড়বেন। নিজে দিন মজুর। কাজ বন্ধ করে কুয়ো খোঁড়লে সংসার চলবে কিভাবে। সিদ্ধান্ত নিলেন কাজে যাবার আগে দুই ঘন্টা এবং কাজ থেকে ফিরে আরো কিছুক্ষন কুয়োর কাজ করবেন। সবাই এ নিয়ে হাসাহাসিও করলো। ৪-৫জনের কাজ একা কিভাবে সম্ভব? তবে এসবে দমে গেলেন না বাপুরাও। প্রতিদিন ১৪ঘন্টার অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে ৪০দিন পর পানির দেখা মিললো কুয়োতে। হাসি ফুটলো সঙ্গীতা-তাঁজের মুখে। বর্তমানে গ্রামের সবাই এই কুয়ো থেকেই পানি সংগ্রহ করে।
পরবর্তীতে ব্যাপারটি আলোচনায় আসে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারও দেন বাপুরাও তাজেঁ। তিনি বলেন, “ঐ কুয়োর মালিকের নাম আমি জানতে চাই না। দরিদ্র ও দলিত বলে তিনি আমার স্ত্রীকে অপমান করেছেন। সেদিনের অপমানে কেঁদেছিলাম। সেই অনুভূতি বলে বোঝাতে পারবো না। সেদিনই ভেবেছিলাম এই গ্রামের কাউকে আর পানি ভিক্ষা করতে দেবো না। এ কারণেই আমি কুয়ো খোঁড়ার চেষ্টা করি।”
এভাবেই যুগে যুগে বর্ণবাদের গালে চটোপাঘাত করে চলেন বাপুরাওয়ের মতো মানুষেরা। পৃথিবীকে জানিয়ে দেন মানুষ হয়ে মাথা নত করে নয়। কারো দয়া-দাক্ষিণ্নে নয়। পরিশ্রম করে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হবে।