এলিয়েন দেখা গেল; তবে ভিনগ্রহে নয় পৃথিবীতে…
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০১৬, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
লিটন দেব জয়:
এলিয়েনের কথা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে হলিউডী সিনেমার ভীবৎসরূপী-ভয়ংকর কিছু প্রাণীর ছবি। আর পৃথিবীতে সত্যিকার যেসব এলিয়েন দেখা মিলেছে তা কতটুকু সত্য এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের ভাবনার শেষ নেই। এলিয়েন বলতে বিজ্ঞানীরা বুঝেন, পৃথিবীর প্রাণবান্ধব পরিবেশ ছাড়াও ভিনগ্রহে যেসব প্রাণী থাকতে পারে তাদের। কিন্তু তাঁদের এমন ধারণা মনে হয় এবার পাল্টাতে হবে। পৃথিবীর অন্য কোটি কোটি প্রাণীর মতো জৈবিক বৈশিষ্ট্যের নয়, অথচ তার বসবাস কিনা পৃথিবীতেই! এমনটি নিশ্চিতভাবেই হতে পারে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
নাসার সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের মোনা লেকের শীর্ষে সম্পূর্ণ নতুন প্রাণবৈশিষ্ট্যের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। সন্ধানটি এ কারণে বিস্ময়কর যে মোনা হ্রদের এ অঞ্চল খুব বেশি আর্সেনিক-সমৃদ্ধ। এ কারণে স্বাভাবিক প্রাণের অস্তিত্ব এ অঞ্চলে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
অথচ ‘আর্সেনিক’ বিষই এ ব্যাকটেরিয়ার নিজের জীবন ধারণের অনেকটা অংশ! লন্ডনের ‘সেন্টার ফর প্লানেটারি সায়েন্স’-এর মহাকাশ-প্রাণবিশারদ ড. লুইস ডার্টনিল বলেন, ‘এসব অণুজীব যদি তাদের পরিপাক-প্রক্রিয়ায় আর্সেনিককে ব্যবহার করে থাকে তবে বলতেই হবে, আমাদের চেনা প্রাণবৈশিষ্ট্যের বাইরেও এ বিশ্বে গাঠনিকভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির প্রাণ রয়েছে এবং সেটা আমাদের পৃথিবীতেও।’ লুইস বলেন, ‘এ ব্যাকটেরিয়া অবশ্যই ভিন জগতের বাসিন্দা (এলিয়েন), তবে তারা আমাদের সঙ্গে একই আবাসভূমি (পৃথিবী) ব্যবহার করছে।’ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ব্যাকটেরিয়াকে দ্বিতীয় ধরনের প্রাণের প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ প্রচলিত ধারণা অনুসারে জীবনের জন্য কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস ও সালফার-এই ছয়টির যে কোন একটি উপাদান অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু নতুন এ ব্যাকটেরিয়া আর্সেনিকের মাধ্যমেই তাদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
প্রচলিত ধারণার বাইরের এ নতুন জীবন আমাদের পৃথিবীর বাইরেও ভিন্ন ধরনের প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে এত দিনের বহু-বিতর্কিত তত্ত্বের পক্ষেই পাল্লা ভারী করল। বিজ্ঞানীরা অন্য গ্রহের যে পরিবেশকে জীবনের জন্য অসম্ভব ভাবছেন, এ ব্যাকটেরিয়ার মতো হয়তো কোন ‘অসম্ভব’ উপাদান ব্যবহার করে সেখানেও জীবনের বিকাশ ঘটছে। এ বিষয়ক একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সায়েন্স’ সাময়িকীতে।