‘পলাতক’ বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এখন লন্ডনে !
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৩৪:৫৭,অপরাহ্ন ০১ আগস্ট ২০১৬
সুরমা নিউজ :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর খোঁজ নেই প্রায় নয় বছর। ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালে দুদকের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় অন্যদের সাথে হারিছ চৌধুরীর নাম উঠার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। বিএনপি আমলে দেশের প্রভাবশালী এই ব্যক্তি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন বলে দাবি করেছে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।
২০১৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারির গ্রেনেড হামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী হওয়ায় সহসাই দেশে ফিরছেন না হারিছ চৌধুরী এমন ধারণা রাজনৈতিক মহলে।
প্রভাব আর রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ জীবন যাপন করেছেন পলাতক হারিছ চৌধুরী। ঢাকা থেকে সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাটের বাড়িতে হারিছ চৌধুরী আসা-যাওয়া করতেন হেলিকপ্টারে। প্রভাব জোরে ঘরের পাশেই পোস্ট অফিস, কৃষি ব্যাংক, মডেল স্কুল, তফশিল অফিস, দাতব্য চিকিৎসালয়, এমনকি পুলিশ ফাঁড়িও স্থাপন করিয়েছিলেন হারিছ চৌধুরী। তিনি গ্রামে যখন থাকতেন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতো না মুহূর্তের জন্যও। কাঁচা রাস্তার গ্রামে শুধু তার বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটি ছিল পিচঢালা। বাড়ির ভেতর নির্মাণ করা হয়েছিল নজরকাড়া বাংলো, ছিল চিড়িয়াখানাও।
চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার দুটি মামলা, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকান্ডে বিস্ফোরক আইনের মামলা ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও আসামি এই হারিছ। হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযোগে কমপক্ষে ছয়টি মামলা হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজার সংলগ্ন দর্পনগর গ্রামে তাঁর মূল বাড়ি। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হওয়ার আগে পর্যন্ত ঢাকার বিজয়নগরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। পাঁচ বছরের ব্যবধানে গুলশানে কেনেন চারটি বাড়ি। অস্ট্রেলিয়া ও লন্ডনে কেনেন একাধিক ফ্ল্যাট।
অবশ্য গুলশানের চারটি বাড়ির মধ্যে একটি তাঁর এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নামে বরাদ্দ নিয়েছিলেন হারিছ চৌধুরী। দুদকে মামলা হওয়ার পর হারিছের পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়িটি ফেরত দেওয়া হয় ২০১৪ সালে।
ঢাকার হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে দুর্নীতির বরপুত্র হয়ে ওঠা হারিছ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম দিকেই আত্মগোপন করেন। এক মাসের বেশি সময় হবিগঞ্জে আত্মগোপনে থাকার পর সিলেট শহরে অবস্থান নেন। তখনই দুর্নীতি দমন কমিশনের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় তাঁর নাম উঠে আসে। একপর্যায়ে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে মামাবাড়ি ভারতের করিমগঞ্জে চলে যান। তাঁর চাহিদা মতো দরকারি কাগজপত্র, দলিল-দস্তাবেজ স্বজনরা বস্তায় ভরে সীমান্তপথে ভারতে তাঁর কাছে পৌঁছে দেয়।
হারিছের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ভারত থেকে তিনি প্রথমে লন্ডনে যান। লন্ডন থেকে ইরানে যান তাঁর ভাই আবুল হাসনাত চৌধুরীর কাছে। ইরান থেকে মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে বর্তমানে লন্ডনে আছেন।