ওসমানীনগরে চলছে জুয়া – ‘তারা’ নিচ্ছেন মাসোহারা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ জুলাই ২০১৬, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কাটাকাটি, ডায়েস, ওয়ান-টেন, ওয়ান-এইট, তিন তাস, নয় তাস, রেমিসহ নানা নাম। নানা নামে, নানাভাবে ওসমানীনগরে অবাধে চলছে জুয়া। জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক চক্র। সর্বস্ব^ান্ত হচ্ছেন অনেকে। আইনানুসারে দ-নীয় অপরাধ হলেও নানা কৌশলে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে জুয়ার আসর।
ওসমানীনগরের বেশ কিছুদিন যাবৎ উছমানপুর, সাদীপুর, গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়ামীর, উমরপুরসহ উপজেলার একাধিক স্থানে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়মিত জুয়ার আসর বসছে। সাদীপুর উত্তর পাড় এলাকার সুন্দিখলা রাস্তার মোড়ে জিলু মিয়া মার্কেট, শেরপুর নতুন বাজার এলাকায় মন পাখির দোকান, ধরখা গ্রামের আমিরুদ্দিনের বাড়ি, শেরপুর টোলপ্লাজার পূর্বে শহীদের বাড়ি, কলারাই বাজারে পূর্বে পুকুর পাড়, উছমানপুর তেরাব আলীর বাড়িসহ উপজেলার অর্ধশতাধিক স্থানে প্রতিরাতে জুয়ার আসরে যোগ দেয় সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকার জুয়ারীরা। এছাড়াও উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের মাটিহানী গ্রামে কয়েকটি স্পটে দিনরাত বসে জুয়ার আসর। এখানে স্থানীয়রা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিশ্বনাথ, মৌলভীবাজার, বালাগঞ্জ, জগন্নাথপুর, নবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে জুয়া খেলে।
প্রতিটি উল্লেযোগ্য জুয়ার আসর থেকে প্রতি রাতে বিভিন্ন হারে টাকা পাচ্ছে নিয়ন্ত্রণকারীরা। তারা উক্ত টাকা থেকে ভাগ দিচ্ছেন প্রশাসনের একাধিক জনকে। জুয়ার আসরের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন প্রভাবশালীরা। ‘ভাই’ হিসেবে পরিচিত এ প্রভাবশালীরা থানা-পুলিশ ও এলাকার কতিপয় নেতাদের ম্যানেজ চলেন।
সন্ধ্যার পর-পরই বিভিন্ন স্পটে বাড়তে থাকে জুয়ারীদের ভীড়। গভীর রাত পর্যন্ত জুয়া খেলা হয় আসরগুলোতে। জুয়াকে কেন্দ্র করে চলে মাদকসেবনও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক বলেন, সংবিধানে জুয়াখেলা নিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাষ্ট্রকে বলা হয়েছে। সংবিধান অনুসারে সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত সব ব্যক্তি এবং সব পর্যায়ের আইন কর্মকর্তাসহ প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারী জুয়াখেলা নিরোধের লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন। তারা কেউই জুয়াখেলা চালু করা বা অব্যাহত রাখার অনুকূলে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। বরং জুয়া দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানান তিনি।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর আউয়াল চৌধুরী বলেন, এলাকার জুয়া খেলার বিষয়ে আমার জানা নেই। যদি কেউ এমন করে থাকেন তবে তা আইন বিরুদ্ধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, উপজেলার স্বাভাবিক অবস্থা বহাল রাখার স্বার্থে প্রতিটি মাসিক সভায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হয়। জুয়ার বিষয়ে আমি জ্ঞাত নই। এমন হলে অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।