বালাগঞ্জের ১৪ছাত্রলীগ কর্মীকে পেটালো বিজিবি; আটকের পর সমঝোতায় মুক্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুলাই ২০১৬, ১:০৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
শ্রীমঙ্গলে বধ্যভূমি একাত্তরে সীমান্ত ৭১ ফ্রেশ কর্নারের কর্মীদের সাথে অশালীন আচরণের দায়ে বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে বিজিবি সদস্যরা। মারধরের পর বিজিবি সদস্যরা ১৪ জনকে আটক করে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করেছে। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে প্রতিষ্ঠানের খাবারের বিল আগে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এ ঘটনার পর শুক্রবার রাতে শ্রীমঙ্গলের বিজিবি ক্যাম্পে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় ও বালাগঞ্জ বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনহার মিয়া অংশ নেন। এরপর রাত দুইটার দিকে শ্রীমঙ্গল থানা হতে বিজিবির উপস্থিতিতে মুক্তি দেয়া হয় ছাত্রলীগের ১৪জন নেতাকর্মীকে।
আটককৃতরা হলো, বালাগঞ্জ উপজেলার মকবুলপুর গ্রামের রমেশ চন্দ্র দেবের ছেলে কানন চন্দ্র দেব (২৭), হুশিয়ার পুর গ্রামের মৌজ উল্লার ছেলে হাবিবুর রহমান (২৮) ও একই গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া (২৫), সোনাপুর কাজী আব্দুল মালেকের ছেলে কাজী ইকবাল হোসেন (১৮), বাঙ্গালিয়া গ্রামের আতাউর আলীর ছেলে রুবেল মিয়া (২৫), মজলিশ পুর গ্রামের সিতেশ দেবের ছেলে সৌরভ দেব(২০) একই গ্রামের বীরেশ দেবের ছেলে শিপন দেব (১৮), সোনাপুর গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে আব্দুল আলী (৩৫), চান্দাইল পাড়া গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে মাজহারুল ইসলাম (১৮) একই গ্রামের বাহার মিয়ার ছেলে লায়েক মিয়া (২৫), বাঙ্গালিয়া গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান (২৫), সোনারপুর গ্রামের আউয়ুব আলীর ছেলে রায়হান আলী (১৮), চান্দাইল পাড়া গ্রামের গৌছ মিয়ার ছেলে রেজওয়ান (২৫) ও মজলিশপুর গ্রামের বীরেন্দ্র দাসের ছেলে নির্মল দাস (৪০)।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় মুঠোফোনে বলেন, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা ছাত্রলীগের ব্যানার নিয়ে আনন্দ ভ্রমনে আসে শ্রীমঙ্গলে বধ্যভূমি একাত্তরে। সেখানে বিজিবি’র পরিচালনায় সীমান্ত ৭১ ফ্রেশ কর্ণারে খাবার খেতে যায়। সেখানে খাবার খেতে হলে আগে টাকা দিতে হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের ছেলেরা এমন নিয়ম না জানার কারণে তারা খাবার খাওয়ার আগে টাকা দিতে চায়নি। আর এই ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিজিবির ক্যান্টিনের সেলসম্যানদের সাথে তারা তীব্র বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে বিজিবির সদস্যরা তাৎক্ষনিকভাবে ১৪ জনকে আটক করে তাদের গাড়ীতে তুলে এনে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে। পরে সমঝোতা বৈঠকে ছেলেদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাদেরকে ভুল সংশোধনের সুযোগ দিয়ে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, দুপক্ষের সমঝোতার পর রাতেই বিজিবির উপস্থিতিতে থানা থেকে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বিজিবি থানায় লিখিত দিয়ে বলে বালাগঞ্জের অজ্ঞাতনামা কিছু ছেলে সীমান্ত ৭১ ফ্রেশ কর্ণারে এসে জিনিসপত্র কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় ছেলেরা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মারধর করতে উদ্যত হলে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটকৃতদের আত্মীয়স্বজন এসে দোষ স্বীকার করেন। দুই চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকে দুপক্ষের কাছে দুটি অঙ্গীকার নামা রাখা হয়। এর একটি কপি থানায় দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগে ২শতাধিক তরুণ ছাত্রলীগের ব্যানারে ৪টি বাসযোগে শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমি একাত্তরে আসে। তারা সীমান্ত ৭১ ফ্রেশ কর্নারে খাবার খেতে চাইলে আগে বিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সাথে বাক-বিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। যা পরবর্তীতে হাতাহাতিতে রূপ নেয়।