ঢাকায় বিপুল অস্ত্র উদ্ধারের নেপথ্যে যিনি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জুন ২০১৬, ৬:১২ অপরাহ্ণ
সুরমা ডেস্কঃ উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের বৌদ্ধমন্দিরের পাশের একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সেগুলো উদ্ধার করলেও এর নেপথ্যে ছিলেন এক পুলিশ কনস্টেবল। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তুরাগ থানা এলাকা দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একজন কনস্টেবল স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ষোলহাটিতে পৌঁছলে তার সন্তান প্রস্রাব করতে চায়। তাই কনস্টেবল মোটরসাইকেলটি দাঁড় করিয়ে শিশুটিকে নিয়ে তখন খালের পাড়ে যান।
তখনই তিনি লক্ষ্য করেন খালের পাড়ে একটি নম্বরবিহীন কালো রঙের পাজেরো গাড়ি দাঁড়ানো অবস্থায়। ওই গাড়ি থেকে তিনজন লোক তাড়াহুড়ো করে কিছু ট্রাভেল ব্যাগ নামাচ্ছে। বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত তুরাগ থানার ওসি মাহবুবে খোদাকে ফোন দিয়ে তা জানান। কিছুক্ষণ পরই ওসি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই তিনজন খালের পাড়ে ব্যাগগুলো ফেলে গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সাতটি ট্রাভেল ব্যাগ খুলে ৯৫টি বিদেশি ৭ দশমিক ৬২ (মি.মি) বোরের পিস্তল, দু’টি দেশি ৭ দশমিক ৬২ (মি.মি) বোরের পিস্তল, ১৮৯টি ৭ দশমিক ৬৫ (মি.মি) পিস্তলের ম্যাগজিন, ১০টি গ্লোপ পিস্তলের ম্যাগজিন, ২৬৩টি এসএমজি ম্যাগজিন, ২২০ রাউন্ড ৭ দশমিক ৬৫ (মি.মি) বোরের পিস্তলের গুলি, ৮৪০ রাউন্ড ৯ এমএম পিস্তলের গুলি, ১০টি বেয়নেট, গুলি তৈরির ১০৪টি ছাচবোড, ১৯ অস্ত্রের বাট পরিষ্কার করার যন্ত্র।
অস্ত্র উদ্ধারের প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রগুলো কারা এনেছিল এবং কি কাজে ব্যবহারের জন্য এনেছিল, তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বলেন, ‘মনির ও মকবুল নামে দু’জন ডুবুরি সেখানে কাজ করছেন। অভিযান এখনো চলছে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাগের ভেতরে ৯৭টি পিস্তল পাওয়া গেছে। পিস্তলগুলো চাইনিজ ব্যাগেই মোড়ানো ছিল। গুলিগুলো টিফিন বক্সের মধ্যে ছিল। তাও ব্যাগের ভেতরে মোড়ানো।’
যেহেতু ওই খালে এলএমজির গুলি পাওয়া গেছে, তাই এলএমজিও থাকতে পারে। এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান মাহমুদুল হক।
দমকলের পরিচালক (অপারেশন) একেএম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘খবর পেয়ে প্রথমে আমাদের দু’টি ইউনিট এসেছিল। পরে পর্যায়ক্রমে আরো সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এছাড়াও কয়েকটি বোট আনা হয়েছে। রাতের কারণে কিছু লাইটও আনা হয়েছে। অভিযান অব্যহত রয়েছে।’
র্যাব-১ এর উপ-অধিনায়ক কাজী মো. সোয়ায়েব জানান, এই খালটি তুরাগ নদীর একটি শাখা। উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের ভেতরে পড়েছে খালটি। খালের পাশেই বড় সড়ক। খালে ১০ থেকে ১৫ ফুট পানি রয়েছে।
ডিএমপির ডিসি (উত্তরা) বিধান ত্রিপুরা বলেন, ‘সাঁড়াশি অভিযানের কারণে এ জায়গাটি নিরাপদ মনে করে অস্ত্রগুলো ফেলে যাওয়া হতে পারে।’