সাত মাস পর ফের পর্যটকদের ভিড় নামবে মাধবকুন্ড ও লাউয়াছড়ায়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০২০, ৩:৩৪ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিনিধি :
মৌলভীবাজারের চিরসবুজের লীলাভুমি, অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকর্ষণীয় দুটি স্থান লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ১ নভেম্বর (রোববার) থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে। মহামারী করোনা সংক্রমণের কারণে সাত মাস বন্ধ ছিলো এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ স্থান দুটি। ১ নভেম্বর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা লাউয়াছড়া ও মাধবকুন্ডে যেতে পারবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ মৌলভীবাজার জোন সূত্র জানায়, ১ নভেম্বর থেকে খুলছে মৌলভীবাজার জেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুন্ড ইকোপার্কসহ বন বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন সকল দর্শনীয় স্থান ও ইকোপার্ক। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দর্শনার্থীগনকে প্রবেশ করার জন্য পর্যটন সংশিষ্টসহ সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। কমলগঞ্জের বন বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ১২৫০ হেক্টর জমি নিয়ে লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চল। ১৯৯৬ সালে এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। উদ্ভিদ আর প্রাণীবৈচিত্রের আধার এই বন বিভিন্ন বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পর্যটকরদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। বন বিভাগের হিসাব মতে, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫৯ প্রজাতির সরীসৃপ (৩৯ প্রজাতির সাপ, ১৮ প্রজাতির লিজার্ড, ২ প্রজাতির কচ্ছপ), ২২ প্রজাতির উভচর, ২৪৬ প্রজাতির পাখি ও অসংখ্য কীট-পতঙ্গ রয়েছে। এই বনে বিরল প্রজাতির উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান , চশমাপড়া হনুমানও দেখতে পাওয়া যায়।
এছাড়া জেলার কুলাউড়া, রাজনগর, বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিশাল অংশ জুড়ে এশিয়ার বৃহত্তর হাওর এর অবস্থান। রয়েছে বিশাল নীল জলরাশি, মিঠাপানি নানা প্রজাতির মাছ, হিজল করচের মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকার দৃশ্য। আর সূর্যদোয় আর সূর্যাস্তের অপ্রাকৃত রুপ যেকোন পর্যটকের মন ভরিয়ে দিবে। সাথে রয়েছে নৌকা ভ্রমণের সুযোগ।
অপরদিকে, মৌলভীবাজার জেলার বড়লখো উপজলোয় মাধবকুন্ড জলপ্রপাতটি বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত। প্রায় ২শ’ ফুট উঁচু টিলা হতে পাহাড়ি ঝর্ণার গড়িয়ে পরা জলরাশি পর্যটকদের বিমোহিত করে। আর জলপ্রপাতের নিকটেই খাসিয়া নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। জলপ্রপাতের চতুর্দিকে বিশাল বনভূমি অবস্থিত। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত সংলগ্ন কুন্ডে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের চৈত্রমাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে বারুনী স্নান হয় বসে বিশাল মেলা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এটি একটি তীর্থ স্থান হলেও পর্যটকদের কাছে রয়েছে বিনোদনের সুযোগ। সব মিলিয়ে আবারও প্রাণ ফিরে পাচ্ছে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পটগুলো।