মনের অসুখ নিয়ে হেলাফেলা নয়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ জুন ২০২০, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মন খারাপ মানেই কিন্তু ডিপ্রেশন নয়! হতাশা বা ডিপ্রেশনের সংজ্ঞা আরও গভীর। হুট করে খারাপ হওয়া মন হয়তো একটু পরেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু হতাশার চিকিৎসা সময় মতো না করলে ধীরে ধীরে সেটি আরও কঠিন আকার ধারণ করে। ফলশ্রুতিতে ঘটতে পারে আত্মহত্যার মতো ঘটনা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সায়মা রিয়াসাত জানাচ্ছেন এ বিষয়ে।মন খারাপ মানেই কিন্তু ডিপ্রেশন নয়! হতাশা বা ডিপ্রেশনের সংজ্ঞা আরও গভীর। হুট করে খারাপ হওয়া মন হয়তো একটু পরেই মন খারাপ মানেই কিন্তু ডিপ্রেশন নয়! হতাশা বা ডিপ্রেশনের সংজ্ঞা আরও গভীর। হুট করে খারাপ হওয়া মন হয়তো একটু পরেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু হতাশার চিকিৎসা সময় মতো না করলে ধীরে ধীরে সেটি আরও কঠিন আকার ধারণ করে। ফলশ্রুতিতে ঘটতে পারে আত্মহত্যার মতো ঘটনা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সায়মা রিয়াসাত জানাচ্ছেন এ বিষয়ে।ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু হতাশার চিকিৎসা সময় মতো না করলে ধীরে ধীরে সেটি আরও কঠিন আকার ধারণ করে। ফলশ্রুতিতে ঘটতে পারে আত্মহত্যার মতো ঘটনা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সায়মা রিয়াসাত জানাচ্ছেন এ বিষয়ে।
কখন বুঝবেন আপনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন?
মুড সুইং একটি সাধারণ বিষয়। কিন্তু সেটা যদি খুব ঘন ঘন হয়, তবে বুঝতে হবে আপনি হতাশায় ভুগছেন। দৈনন্দিন কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলা, কোনও কিছুই ভালো না লাগা, হঠাৎ রেগে যাওয়া, অতিরিক্ত খাওয়া কিংবা ক্ষুধামন্দা হওয়া, বেশি বেশি ঘুমানো অথবা অনিদ্রা- এগুলো সবই হতাশার লক্ষণ। এছাড়া সবসময় নেতিবাচক চিন্তা করা, মৃত্যুভয়, জীবন একঘেয়ে লাগা, কারোর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে না করাও হতশার লক্ষণ।
কেন হতাশা?
ডিপ্রেশনের বহু কারণ যেমন থাকতে পারে, তেমনি নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়াও মানুষ ভুগতে পারে হতাশায়। পরিবার বা কাছের কারোর মৃত্যু, ডিভোর্স কিংবা ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া অ্যাবিউসিভ কোনও ঘটনা হতে পারে হতাশার কারণ। এছাড়াও জীবনের বড় কোনও পরিবর্তন যেমন বিয়ে, নতুন কলেজ/ইউনিভার্সিটি, চাকরি চলে যাওয়া, নতুন চাকরি, কাছের কারোর সঙ্গে দূরত্ব- এগুলোর কারণেও মানুষ নিমজ্জিত হতে পারে হতাশায়। অনেক সময় জেনেটিক কারণে মানুষ হতাশায় ভোগে। সাধারণত পরিবারের কারোর কাছ থেকে এই হতাশা বংশানুক্রমে চলে আসে।
কী করণীয়?
যদি মনে করেন আপনি হতাশায় ভুগছেন, নিজেকে সেখান থেকে বের করার চেষ্টা শুরু করুন দ্রুত। মনে রাখবেন, নিজেকে ভালোবাসার কোনও বিকল্প নেই।
সবসময় নিজেকে আনন্দে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ভালো থাকার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। অনেক সম্পত্তি থাকলেই সে খুব সুখি- এমনটা নয়। ফলে অমুকের এটা আছে, আমার নেই- এমন চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারোর সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে অবসাদগ্রস্ত হওয়া যাবে না। আপনি যাকে পুরোপুরি সুখি ভাবছেন, তারও কোনও না কোনও অপ্রাপ্তি আছে। ফলে এখানে নিজের চাইতে কাউকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার একদমই প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেকে কতোটুকু ভালো রাখতে পারছেন, সেটার উপরই আপনার নিজের আনন্দ নির্ভর করছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব বেশি সময় না দেওয়ার চেষ্টা করুন। দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় এখানে ব্যয় করুন। মনে রাখবেন,
এখানে যা দেখছেন সেগুলো মোটেও যেমন দেখছেন সেই রকম নয়। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কারোর অসংখ্য ফলোয়ার, খ্যাতি-যশ, জাঁকজমকপূর্ণ জীবন দেখে নিজের সাথে তুলনা করতে যাবেন না ভুলেও। এক লাখ ফলোয়ার থাকার চাইতেও হাতে গোণা কয়েকজন বন্ধু থাকা যে ভীষণ প্রয়োজন, সেটা আপনাকেই বুঝতে হবে।
নিজের শখের কাজ খুঁজে বের করুন। হতে পারে বই পড়া, সিনেমা দেখা কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া। ক্রিয়েটিভ কাজে উৎসাহ পেলে সেটাকেও আঁকড়ে ধরতে পারেন। ব্যস্ত থাকুন এসব কাজে।
একই নিয়মে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন। খাবারের সময়ও ঠিক রাখুন। প্রতিদিন কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করুন।
খুব জরুরি একটি বিষয় হচ্ছে নিজের মনের ভাব প্রকাশের চর্চা রাখা। আপনি হতাশায় ভুগছেন সেটা পরিবারের সদস্য বা কাছের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার কেমন লাগছে, কেন এমন লাগছে- এগুলো বলুন তাদের। সমাজ কী বলবে বা মানুষ কটাক্ষ করবে- এই ধরনের চিন্তা একেবারেই করবেন না।
হতাশা কাটাতে বিশেষজ্ঞ কাউন্সিলরের সাহায্য নিতে পারেন। নিয়মিত কাউন্সেলিং আপনাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করবে।
কেবল নিজের ক্ষেত্রেই নয়, যদি লক্ষ করেন যে পরিবারের কেউ বা বন্ধুদের কেউ হঠাৎ খানিকটা অদ্ভুত আচরণ করছে কিংবা চুপচাপ হয়ে গেছে- তবে হয়তো তিনিও হতাশায় ভুগছেন। আপনার দায়িত্ব তখন তাকে সাহায্য করা।