হাসপাতালেই মরণফাঁদ : সিলেটে কিশোরীর করুণ মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ২:৫৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাউন্ডারি দেয়ালের কাঁটাতারে বিদ্যৎ স্পৃষ্ট হয়ে এক কিশোরীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। মৃত ওই কিশোরীর নাম লাকি আক্তার (১২)। সে উপজেলার কাঠাল বাড়ি গ্রামের হতদরিদ্র নবী হোসেনের মেয়ে।
জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাউন্ডারি দেয়ালের উপরে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া। সেই কাঁটাতারের সাথে ইনসুলেটর দিয়ে ৬ হাজার ৫শতল ভোল্টের বিদ্যুতিক তার আটকানো রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুকনো লাকড়ি সংগ্রহ করতে আসে লাকি আক্তার ও তার মা। একপর্যায়ে বাউন্ডারি দেয়াল সংলগ্ন একটি গাছের শুকনো ডাল ভাঙতে দেয়ালের উপরে উঠে ওই কিশোরী। এ সময় অসাবধানতাবশতঃ বৈদ্যুতিক তাঁরে জড়িয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয় সে। এসময় তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। তার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা তাকে বাঁশের মাধ্যমে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাৎক্ষণিক লাকি আক্তারকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টায় মৃত্যুবরণ করে লাকি আক্তার।
২ এপ্রিল সকাল ১০.৩০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে ঐ কিশোরী তার মাকে নিয়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে যায়। স্থানীয়রা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২ টায় তার মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর পাশের বাউন্ডারি দেয়ালের উপর কাটাতারের রেলিং দেয়া। সেই রেলিংয়ের সাথে একটি ইনসুলেটর দিয়ে ১১শ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তাঁর আটকিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এভাবেই তাঁরটি বিপজ্জনকভাবে কাঁটাতারের সাথে আটকানো রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সিরাজুল ইসলাম ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুম আহমদ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। কেউ নাকি এই বিষয়ে কিছুই বলে তাদের। কিন্তু ১১শ ভোল্টেজের তাঁর ইনসুলেটর দিয়ে লাগাতে হলে পল্লী বিদ্যুতের টেকনিশিয়ান ছাড়া কেউ লাগাতে পারবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুম আহমদ বলেন, এই তাঁরের বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। আমি গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে এখানে এসেছি। এই ৩ মাসের ভেতরে কেউ আমাকে কখনো বলেও নি। তবে খুব তাড়াতাড়ি এই তার উপরে তোলার ব্যবস্থা করা হবে।
কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সিরাজুল ইসলামও এই বিষয়ে দায়সারা উত্তর দিয়ে বলেন, আমরা জানতাম না যে এখানে এই তার এভাবে রেলিংয়ের সাথে আটকানো আছে। কর্তৃপক্ষও আমাদেরকে কিছু জানায়নি। এই তাঁর এখানে কিভাবে ইনসুলেটর দিয়ে লাগানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি দায় এড়িয়ে যান। বলেন মেডিকেলে কাজ চলছে হয়তো ঠিকাদার আটকে রাখতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন আচার্য বলেন, বাউন্ডারি দেয়ালের রেলিংয়ের সাথে বৈদ্যুতিক তার আটকানো ঠিক হয়নি। আমি ডিজিএম সাহেবকে খুব শীঘ্রই এই তার উপরে তোলার জন্য বলেছি।