দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নাম ভাঙিয়ে সিলেটের বাবলুর ‘ফাঁদ’ এবার বড়লেখায়!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ৫:১৮ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
সিলেটের বাবলু এবার শিল্প ও বাণিজ্য মেলার ‘ফাঁদ’ পেতেছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখায়। সেখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নাম ভাঙিয়ে চালাচ্ছেন মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। সিলেটে ‘মেলা বাবলু’ হিসেবে সমালোচিত মঈন খান বাবলু। এখানে-সেখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নামে মেলার আয়োজন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন সময় ওঠেছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বড়লেখায় ‘বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটি’র নাম দিয়ে প্রভাবশালী একটি চক্র এই মেলার আয়োজন করেছে। ওই চক্রটি বিভিন্ন সময় সিলেটের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিবন্ধীদের নাম ব্যবহার করে মেলার আয়োজন করলেও বাস্তবে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কোনো টাকাই ব্যয় করা হচ্ছে না। বরং এই চক্রের বিরুদ্ধে উল্টো লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়েছে। যার কারণে মেলা থেকে অর্জিত অর্থ বাস্তবে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় হবে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখায় মাসব্যাপী মেলা শুরু হয় গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি। বড়লেখা সরকারি কলেজ মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ।
জানা গেছে, প্রতিবন্ধীদের নাম ব্যবহার করে প্রভাবশালী একটি চক্র বিভিন্ন সময় সিলেটের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের ম্যানেজ করে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে। মূলত সহজে মেলার অনুমতি পেতে চক্রটি প্রতিবন্ধীদের নাম ব্যবহার করে থাকে। এই চক্রটি এবার ‘বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটি’র নাম দিয়ে বড়লেখা উপজেলায় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করেছে।
সূত্র জানায়, প্রভাবশালী ওই চক্রের নেপথ্যে রয়েছেন এম.এ মঈন খান বাবলু। তিনিই মেলার প্রধান আয়োজক। বাবলু বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় প্রধান সমন্বয়ক। আর এই সংগঠনের সভাপতি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এমএম মোশারফ হোসেন। তিনি বাবলুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বাবলুই বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের ম্যানেজ করে এসব মেলার আয়োজন করে থাকেন। এসব মেলা থেকে লাখ লাখ টাকা আয় হলেও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কোনো টাকাই ব্যয় হয় না। অভিযোগ রয়েছে, মেলার শুরুতেই আয়োজকরা মেলা থেকে আয়ের অর্জিত ৬০ শতাংশ অর্থ স্থানীয় প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয়ের আশ্বাস দেন। কিন্তু মেলা শেষ হলেই লাখ লাখ টাকা নিয়ে তারা সটকে পড়ে। ফলে প্রতিবন্ধীরা কোনো টাকা পান না।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় প্রধান সমন্বয়ক এম.এ মঈন খান বাবলু মুঠোফোনে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়েই মেলার আয়োজন করেছি। মেলার আয়োজক আমি নই। মূলত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সোসাইটি এই মেলার আয়োজন করেছে।’
এ ব্যাপারে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান মুঠোফোনে আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের অনুমতিতে মেলা হচ্ছে। তবে যেসব শর্তে প্রশাসন মেলার অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলো ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’