সিলেটে বউ আনতে ঘাড়ে চাপলেন বর, ছবি ভাইরাল!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৯, ৫:১১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সকল নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। অনবরত বৃষ্টির কারণে গত শুক্রবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জৈন্তাপুর উপজেলায় আকস্মিক বন্যায় অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ঘর থেকে রাস্তায় বেরোতে পারছেন না। পানিতে তলিয়ে গেছে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এছাড়া প্লাবিত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
তবে বৈরী আবহাওয়ায়ও চলছে সামাজিক নানা অনুষ্ঠানও। পূর্ব নির্ধারিত এ সকল অনুষ্ঠান সফল করতে হচ্ছে বন্যার পানি মাড়িয়ে। নতুন নতুন পথও তৈরি হচ্ছে। যেমন কনে আনতে বরকে যেতে হচ্ছে কারো ঘাড়ে চেপে বা কলা গাছের তৈরি ভেলায় করে।
সিলেটের জৈন্তাপুরে এমনই একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। দেখা গেল, একজনের কাঁধে চড়ে বর যাচ্ছেন কনের বাড়িতে। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি নিয়ে এখন চলছে নানা আলোচনা।
জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট উজানীনগর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে কিছুটা প্রতিবন্ধী রুবেল আহমদের সঙ্গে বিয়ের দিন ধার্য হয় শুক্রবার (১২ জুলাই)। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বিয়ে করে কনেকে আনতে যথাসময়ে উপস্থিত হন বর। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া কিছুটা বিষন্ন করলেও শেষ পর্যন্ত দমাতে পারেনি বিয়ের অনুষ্ঠান। বেশ কয়েকজন বরযাত্রী নিয়েকনের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট মেঘলি গ্রামের রজব আলীর মেয়ে শামিমা বেগমকে আনতে রওনা দেন রুবেল মিয়া ও তার সঙ্গে থাকা বরযাত্রীরা। বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় বর ভিজে যাবেন, তাই বর রুবেলকে নিজ কাঁধে তুলে নেন নিজপাট ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য হুমায়ুন কবির খান। তার এমন মহানুভবতা দেখে অনেকেই তাকে সাধুবাদও জানান।
জানা গেছে, টানা বৃষ্টির ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার জনজীবন বির্পযস্ত। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকার মানুষের বাড়িঘরে বানের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। জনসাধারণকে নৌকা ও কলার গাছের তৈরি ভেলায় চড়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যারপানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় নিজপাট, জৈন্তাপুর, চারিকাটা, দরবস্ত ও ফতেহপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যা কবলিত নিজপাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে নিম্নাঞ্চল এলাকায় বসবাসরত মানুষ সর্তক থাকার আহবান জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সর্তক রযেছে বলে জানিয়েছেন।
জৈন্তাপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল জনান, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতিরহাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে প্রশাসন সর্তক রয়েছে। ত্রাণ সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।