জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়ক যেন হাঁ করা মৃত্যুফাঁদ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০১৯, ১১:২৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ওপর দিয়ে বিভাগীয় শহর সিলেট ও রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এই সংযোগ সড়কটি ব্যবহার করে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সড়কটির অবস্থা করুণ। ফলে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ও এলাকাবাসী জানায়, ২০১৭ সালে জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ি পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সংস্কার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নূরা এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় নির্মাণের তিন মাসের মাথায়ই সড়কের একাধিক স্থানে ভাঙন ও গর্ত সৃষ্টি হয়। জগন্নাথপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালেও ১০ লাখ টাকার সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করে। বর্তমানে এই ১৩ কিলোমিটার অংশই বেহাল। পিচ উঠে সড়কজুড়ে গর্ত আর খান্দাখন্দে ভরে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক সংস্কারের নামে সরকারি বরাদ্দ অর্থ লুট হয়। আর বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনসাধারণকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ি পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার ও কেউনবাড়ি থেকে বিশ্বনাথ বাইপাস মুখ পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কেই বড় বড় গর্ত। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে কাদাপানিতে একাকার। গর্তের মধ্যে প্রায়ই মালবাহী ট্রাক আটকে পড়ে। এর ফলে সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে সড়কের মীরপুর বাজার এলাকার মেঘারকান্দি সেতুর মোড়ে একটি ট্রাক গর্তে পড়ে। এতে প্রায় চার ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে ওই পথে। এ রকম ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে।
অন্যদিকে বিশ্বনাথ অংশের অবস্থা আরো নাজুক। এ পথে নিয়মিত যাতায়াতকারী জগন্নাথপুর বাজারের আবু হেনা রনি বলেন, ‘সড়ক সংস্কারের জন্য কোটি কোটি টাকা সরকার বরাদ্দ দেয়। কিন্তু নিম্নমানের কাজের কারণে সেই রাস্তা বছরও টেকে না। এর ফলে জনগণের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’ ফজলু মিয়া বলেন, ‘লক্কড়ঝক্কড় সড়ক দিয়ে যানবাহনে চলাচলও কষ্টকর।’
স্থানীয় সরকার উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘২০১৭ সালে যখন সড়কটির কাজ হয়, তখন আমি এ উপজেলায় ছিলাম না। আমি এসেই সড়কের নাজুকদশা দেখেছি। গত বছর কিছু মেরামত করেছি। এবারও জরুরি মেরামতের জন্য ১৩ লাখ টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে একটি সড়ক সংস্কারের তিন বছরের মধ্যে পুনরায় সংস্কার করার নিয়ম না থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। আগামী অর্থবছরে সংস্কার করা হবে।’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিশ্বনাথ উপজেলার প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন যোগ দিয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ নেব।’
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বেহালদশায় একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিয়ত লজ্জায় পড়তে হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করতে সুনামগঞ্জ জেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় আলোচনা করেছি।